বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
নেপালে বঙ্গনারী।

আমার দেহকে আলিঙ্গন করিল। এমন দিন আমার জীবনে আসিবে ভাবি নাই ত? দুই বৎসর নেপালে বাস করিয়া, দীর্ঘ নিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া বলিতে হইল, এযে আমার স্বাধীন রাজ্যের স্বপ্ন। স্বাধীনতায় এ জাতি কি লাভ করিয়াছে হায়! আমি তাহা দেখিতে পাইলাম না!

নেপালের ব্রিটীশ প্রেসিডেণ্ট।

 নেপালের বর্ত্তমান ইতিহাসের কথা বলিতে গিয়া কাটমণ্ডুর ব্রিটীশ রেসিডেণ্টের কথা উল্লেখ না করিলে কাহিণী অসম্পূর্ণ থাকে। পূর্ব্বেই উল্লেখ করিয়াছি পৃথ্বীনারায়ণের নেপাল জয়ের পূর্ব্ব হইতে কাটমণ্ডুর মল্লরাজার সহিত ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির ব্যবসা বাণিজ্যজাত সম্বন্ধ ছিল। সেই সূত্রে পৃথ্বীনারায়ণ নেপাল আক্রমণ করিলে তাঁহারা ইংরাজের সহায়তা ভিক্ষা করিয়াছিলেন। পলাশীর যুদ্ধ এবং গুর্খা কর্ত্তৃক নেপাল জয় প্রায় সমসাময়িক ঘটনা। ক্যাপটেন নক্স কাটমণ্ডুতে গিয়া নেপালরাজের সহিত বন্ধুতা সূত্রে আবদ্ধ হইতে চেষ্টা করিয়া বিফল মনােরথ হইয়া প্রত্যাবর্ত্তন করেন। প্রথমে নেপালীরা ব্রিটীশ গবর্ণমেণ্টকে অবজ্ঞার চক্ষে দর্শন করিত। শিখদিগের সহিত যুদ্ধের সময়, আফগানিস্থানের দুর্ঘটনায় তাহারা অত্যন্ত উৎফুল্ল হইয়া উঠিয়াছিল। ১৮১৬ খ্রীষ্টাব্দের যুদ্ধের পর নেপালীদিগের চৈতন্যের উদয় হয়। ভীমসেন থাপাই একথা স্পষ্টাক্ষরে স্বজাতিকে বুঝাইয়া বলেন, যে স্বাধীনতা রক্ষার একমাত্র উপায় ইংরাজের সহিত কোন প্রকার সংঘর্ষণ উপস্থিত না করা।