পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপালের অধিবাসীগণ।
১৯

কখনও দেখা যায় না। নারীগণ সচরাচর বিশ ত্রিশ হস্ত দীর্ঘ বিচিত্র বর্ণের শাড়ী পরিধান করে। হিন্দুস্থানী মেয়েদের ন্যায় সম্মুখে কোঁচা, তাহা প্রায় ভূমিতে লুটাইয়া পড়ে, উর্দ্ধাঙ্গে জামা। প্রায় দশ হাত লম্বা নাতিপরিসর কাপড় কোমরে জড়াইয়া রাখে। শাড়ী খানা কোঁচা করিতেই যায়। দেহের উপরার্দ্ধ আবরণের জন্য চাদর বা ওড়না ব্যবহৃত হয়। কুমারী, সধবা, কি বিধবা কাহারও মস্তকে আবরণ নাই। নেপালী রমণীদিগের কেশ বিন্যাসের ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। আমরা সম্মুখে সিঁতি কাটিয়া পশ্চাতে বেনী রচনা করি; তাহারা পশ্চাতে সিঁতী কাটিয়া কাপালের উপরে এক দীর্ঘ বেনী রচনা করে এবং তাহার শেষ ভাগে রক্তিম বর্ণের সুতার গুচ্ছ বাঁধিয়া আপনাদের সৌভাগ্য প্রকাশ করে। বিধবাগ লাল সুতা বাঁধে না। বেনীতে লাল সুতা বাঁধা ভিন্ন সধবাদের আর দুইটা লক্ষণ আছে। হাতে কাঁচের চুড়ি, গলায় পুঁথির মালা। এই দুইটাই কিন্তু বিলাতি জিনিষ। সধবাদিগের প্রধান লক্ষণ এই দুইটী বিলাতি জিনিষ কিরূপে হইল তাহা বুঝিতে পারা যায় না। রাজরাণী হইতে পথের ভিখারিণী পর্যন্ত হাতে কাঁচের চুড়ি গলায় পুঁথির মালা; নেপালে এবম্বিধ লক্ষণযুক্তা রমণী দেখিলেই তাঁহাকে ভাগ্যবতী পতিযুক্তা স্থির করিতে হইবে। হিন্দুস্থানী কিংবা বাঙ্গালী রমণীর ন্যায় নেপালি নারীকূলের অঙ্গে অলঙ্কারের প্রাচুর্য্য নাই।

 মস্তকে সোনার গহনা, কাণে বড় বড় পাশার ন্যায় সোনার ফুল, গলায় পদকের ন্যায় গহনা। চরণে পাঁয়জর ভিন্ন অন্য কোন