পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চনদের তীরে

 আলেকজাণ্ডার সানন্দে বই পড়তে পড়তে শুনতে পাচ্ছেন, শিবিরের বাহির থেকে মাঝে মাঝে জাগছে বুকেফেলাসের—অর্থাৎ ‘ষণ্ডমুণ্ডে’র হ্রেষা-রব!

 এই ষণ্ডমুণ্ড হচ্ছে আলেকজাণ্ডারের বড় আদরের ঘোড়া,— একে তিনি কখনো নিজের কাছ থেকে তফাতে রাখতেন না।

 ষণ্ডমুণ্ডের সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয়ের কাহিনীও রীতিমত গল্পের মতো।

 তাঁর পিতা ফিলিপ তখন মাসিডনিয়ার রাজা এবং আলেকজাণ্ডার তখন ছোট্ট এক বালক।

 একজন অশ্ব-ব্যবসায়ী মহা-তেজীয়ান এক ঘোড়া নিয়ে এল রাজা ফিলিপের কাছে বিক্রয় করতে।

 ঘোড়াকে পরীক্ষা করবার জন্যে ফিলিপ তাঁর পল্টনের জনকয় পাকা ঘোড়-সওয়ারকে আহ্বান করলেন। কিন্তু কোনো সওয়ার তার পিঠে চড়বার চেষ্টা করলেই সেই তেজী ঘোড়া এমন ভয়ানক ক্ষেপে ওঠে যে, কেউ ভরসা ক’রে আর তার কাছে এগুতেই চাইলে না।

 ফিলিপ বললেন, “এতো ভারি বদ-মেজাজী ঘোড়া দেখছি! এ আপদ এখনি দূর ক’রে দাও।”

 এতটুক ছেলে আলেক্‌জাণ্ডার তখন এগিয়ে এসে বললেন, “মহারাজ, আপনার সওয়াররা ঘোড়া চেনে না তাই এমন চমৎকার ঘোড়ার পিঠে চড়তে পারছে না।”

 ফিলিপ বিরক্ত হয়ে বললেন, “আলেকজাণ্ডার! তোমার ছোট-মুখে এত-বড় কথা শোভা পায় না! তুমি কি নিজেকে আমার সওয়ারদেরও চেয়ে পাকা ব’লে মনে করো?”

 আলেকজাণ্ডার দৃঢ়স্বরে বললেন, “আজ্ঞে হাঁ মহারাজ! আমি বাজি রেখে এখনি ঐ ঘোড়ার পিঠে চড়তে রাজি আছি!”

১৪