পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ

ভারতবর্ষের জয়!

 আলেকজাণ্ডার আদেশ দিয়েছেন, সমরখন্দে গ্রীকদের শিবিরে শিবিরে তাই আজ উঠেছে বিপুল উৎসবের সাড়া।

 পানাহার, নাচ, গান, বাজনা, কৌতুক ও খেলাধূলা চলেছে অশ্রান্ত ভাবে—সৈনিকদের নিশ্চিন্ত ছেলেমানুষি দেখলে কে আজ বলবে যে, এদের ব্যবসা হচ্ছে অকাতরে নিজের জীবন দেওয়া ও পরের জীবন নেওয়া!

 আলেকজাণ্ডারের বৃহৎ শিবির আজ লোকে লোকারণ্য। সৈন্যদের মধ্যে যাঁরা গণ্যমান্য ব্যক্তি তাঁরা সবাই সেখানে এসে আমোদআহ্লাদ করছেন। সেকালকার গ্রীকদের ভোজসভার একটি ছোট্ট ঐতিহাসিক ছবি এখানে এঁকে রাখলে মন্দ হবে না।

 শিবিরের মাঝখানে রয়েছে খান-কয় রৌপ্যখচিত কাঠের কৌচ—কাঠের গায়ে রঙিন নক্সা। কৌচের উপরে ‘কুশন’ বা তাকিয়ায় ভর দিয়ে পা ছড়িয়ে বা অর্ধশায়িত অবস্থায় রয়েছেন অতিথিরা। এমনি অর্ধ শায়িত অবস্থায় পানাহার করতে শিখেছেন এঁরা পারসী প্রভৃতি প্রাচ্য জাতির কাছ থেকেই। কৌচের সামনে আছে আরো-নীচু কতকগুলো ছোট টেবিল, তাদের পায়াগুলো হাতীর দাঁতে তৈরী। এই-সব ছোট টেবিলের উপরে খাবার-দাবার ও পানপাত্র সাজানো।

 গ্রীকরা সেকালে ছিল অতিরিক্ত-রূপে মাংসপ্রিয়। তারা মাছও খেত, তবে মাংসের কাছে মাছকে তুচ্ছ ব’লে মনে করত। শাকসব্জী ব্যবহার করত খুব কম। মদ খাওয়া তাদের কাছে দোষনীয় ছিল না, প্রকাশ্যেই সবাই মদ্যপান করত। মদের সঙ্গে খেত পেঁয়াজ।

২২