পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অভিনেতা দিগ্বিজয়ী

আজ থেকে আমিও আর তোমাদের সেনাপতি নই—তোমরাও হ’লে স্বাধীন! আমি তোমাদের ত্যাগ করলুম, আমাকে এখানে একাকী রেখে তোমরা গ্রীসে ফিরে যাও। আমার আর কোনও বক্তব্য নেই”—বলতে বলতে তাঁর দুই চোখ ছল-ছলে ও কণ্ঠ অশ্রুরুদ্ধ হয়ে এল।

 বীরত্বের অবতার ও গ্রীসের সর্বে-সর্বা সম্রাট আলেকজাণ্ডারের এই কাতর দীনতা ও অতিস্বর সৈন্যরা সহ্য করতে পারলে না, তারা এককণ্ঠে ব’লে উঠল, “সম্রাট-সম্রাট! আপনি আমাদের ত্যাগ করবেন না, আপনার সঙ্গে আমরা মৃত্যুর মুখেও ছুটে যেতে প্রস্তুত! আমরা ভারতবর্ষে যাবো—আমরা ভারতবর্ষে যাবো!”

 আলেকজাণ্ডারের মুখে আবার হাসির রেখা ফুটল, উচ্ছ্বসিত স্বরে তিনি বললেন, “এই তো আমার সৈন্যদের যোগ্য কথা! ক্লিটাস্, হতভম্বের মতো আমার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখছ কি? যাও, আমার সৈন্যদের জন্যে আজ বিরাট এক ভোজের আয়োজন করো গে! কালই আমরা ভারতবর্ষের দিকে যাত্রা করবো।”

 হাজার হাজার সৈন্যের মুখ থেকে তখন বিদ্রোহের সমস্ত চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে গেছে, তারা একসঙ্গে অসি কোষমুক্ত ক’রে শূন্যে আস্ফালন করতে করতে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে ব’লে উঠল, “জয়, সম্রাট আলেকজাণ্ডারের জয়! ভারতবর্ষ, ভারতবর্ষ! পঞ্চনদের তীরে!”

২১