পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম ও দ্বিতীয় ৰলি

বন্ধু, মৃত্যুর পথ এখন ভারতের দিকেই অগ্রসর হয়েছে! আমরাও বাঁচবো না, তোমরাও বাঁচবে না, বিদায়!”

 চিত্ররথকে আলিঙ্গন ক’রে সুবন্ধু যখন বেগে ছুটতে লাগল তখন তার দুই চোখ দিয়ে ঝরছে ঝর ঝর্ ক’রে অশ্রুর ঝরণা!

 চিত্ররথ তার বিরাট দেহ নিয়ে সেই দেড়-হাত-সরু পথ জুড়ে দাঁড়িয়ে অট্টহাস্য ক’রে বললে, “ভাই পুরঞ্জন, কাঁধ থেকে ধনুক নামাও! দেখছ, নির্বোধ গ্রীকদের কেউ ধনুক-বাণ আনেনি। আমাদের ধনুকের বাণগুলোই আজ ওদের উপরে উঠতে দেবে না।” ব’লেই সে নিজের ধনুক হাতে নিলে।

 ওদিকে ত্রিশজন গ্রীক সৈনিক তখন পাহাড়ের তলদেশে এসে হাজির হয়েছে। এখানে ঘোড়া অচল এবং পদব্রজেও উপরে উঠে একসঙ্গে আক্রমণ করা অসম্ভব দেখে তারা দল বেঁধে দাঁড়িয়ে পরামর্শ করতে লাগল।

 তাদের অধ্যক্ষ তরবারি নেমে নীচে থেকে চেঁচিয়ে বললে, “ওরে ভারতের নির্বোধরা! ভালো চাস তো এখনো আত্মসমর্পণ কর, নইলে মৃত্যু তোদের নিশ্চিত!”

 পুরঞ্জন ও চিত্ররথ কোনো জবাব দিলে না, কেবল ধনুকে বাণ লাগিয়ে পাথরের মূর্তির মতন স্থির হয়ে রইল ৷

 অধ্যক্ষ চীৎকার ক’রে বললে, “শোনো গ্রীসের বিশ্বজয়ী বীরগণ! সম্রাটের আদেশ, হয় ওদের বন্দী, নয় বধ করতে হবে! প্রাণের ভয়ে ঐ কাপুরুষরা নীচে যখন নামতে রাজি নয়, তখন ওদের আক্রমণ করা ছাড়া উপায় নেই! যাও, তোমরা ওদের বন্দী করো, নয় ইঁদুরের মতো টিপে মেরে ফেলো!”

 ঢাল, বর্শা, তরবারি নিয়ে গ্রীকরা পাহাড়ে-পথের উপরে

৩৭