পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম ও দ্বিতীয় বলি

 পাঁচ-ছয়বার চেষ্টার পর গ্রীকদের দলের এগারো জন লোক হত বা আহত হ’ল।

 পুরঞ্জন সানন্দে বললে, “দু-ঘণ্টা কেটে গেছে! সুবন্ধুকে আর কেউ ধরতে পারবে না। জয়, ভারতবর্ষের জয়।”

 গ্রীক সেনাধ্যক্ষ মনে মনে প্রমাদ গুণলে; ও-পথ হচ্ছে সাক্ষাৎমৃত্যুর পথ! ত্রিশজনের মধ্যে এগারোজন অক্ষম হয়েছে, বাকী আছে ঊনিশজন মাত্র! দুজনের কাছে ত্রিশজনের শক্তি ব্যর্থ, সম্রাট শুনলে কী বলবেন!

 হঠাৎ একজন সৈনিক এসে খবর দিলে, “পাহাড়ে ওঠবার আর একটা নতুন পথ পাওয়া গেছে!”

 সেনাধ্যক্ষ সানন্দে বললে, “জয় আলেকজাণ্ডারের জয়! আমরা নয়জনে এইখানেই থাকি। বাকী দশজনে নতুন পথ দিয়ে উপরে উঠে শত্রুদের পিছনে গিয়ে দাঁড়াক! তারপরে দুই দিক থেকে ওদের আক্রমণ করো!

 বেশ-খানিকক্ষণ কেটে গেল! শত্রুদের কেউ আর উপরে ওঠবার চেষ্টা করছে না দেখে চিত্ররথ আশ্চর্য হয়ে বললে, “পুরঞ্জন, তাহ’লে আমরা কি অনন্ত কালের জন্যে এইখানেই ধনুকে তীর লাগিয়ে ব’সে থাকবো?

 পুরঞ্জন, বললে, “হাঁ। যত সময় কাটবে, সুবন্ধু ততই দূরে গিয়ে পড়বে। আমরা তো তাইই চাই!”

 পাহাড়ের গায়ে ছায়া ক্রমেই দীর্ঘতর হয়ে উঠতে লাগল। সূর্য গিয়েছে আকাশের পশ্চিমে।

 আচম্বিতে পাহাড়ের উপর জেগে উঠল ঘন ঘন পাদুকার পর পাদুকার শব্দ!

 চিত্ররথ মুখ ফিরিয়ে দেখেই কঠোর হাসি হেসে বললে, “পুরঞ্জন, এ-জীবনে শেষবারের মতো ভারতের নাম ক’রে

৩৯