পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চনদের তীরে

নাও! জয় ভারতবর্ষের জয়! চেয়ে দেখো, শত্রুরা আমাদের পিছনে!”

 —“শত্রুরা আমাদের দুই দিকেই! দেখো চিত্ররথ, নীচে থেকেও ওরা উপরে উঠছে!”

 —“পুরঞ্জন, আমার ধনুকের জন্যে আর দু’টি মাত্র বাণ আছে!”

 —“চিত্ররথ, আমার ধনুকের জন্যে আর একটিমাত্র বাণও নেই!”

 —“তাহ’লে আবার বলো,—জয়, ভারতবর্ষের জয়!”

 —“জয়, ভারতবর্ষের জয়! নাও তরবারি, ঝাঁপিয়ে পড়ো মৃত্যুর মুখে!”


 পুরঞ্জন ও চিত্ররথের তরবারি নাচতে লাগল অধীর পুলকে, অস্তগামী সূর্যের শেষ-কিরণ আরক্ত ক’রে তুললে তাদের সাংঘাতিক আকাঙ্ক্ষাকে! তিনজন গ্রীক সৈনিকের মৃতদেহ পাহাড়ের কালো দেহকে লালে লাল ক’রে তুললে বটে, কিন্তু তারপর আর আত্মরক্ষা করতে পারলে না ভারতের বীরত্ব! ত্রিশজনের বিরুদ্ধে মাত্র দুইজন দাঁড়িয়ে চৌদ্দ জন শত্রুনাশ করেছে, কিন্তু তারপরেও অবশ্যম্ভাবীকে আর বাধা দেওয়া গেল না! গ্রীক তরবারির মুখে পুরঞ্জনের দক্ষিণ বাহু বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটির উপরে গিয়ে পড়ল, কিন্তু তখনো সে কাতর হ’ল না, বাম হাতে বর্শা নিয়ে শত্রুদের দিকে বেগে তেড়ে গেল আহত সিংহের মতো গর্জন ক’রে।

 পর-মুহূর্তেই পুরঞ্জনের ছিন্নমুণ্ড দেহ ভূমিতলকে আশ্রয় করলে।

 চিত্ররথেরও সর্বাঙ্গ দিয়ে ঝরছে তখন রক্তের রাঙা হাসি! প্রায়-বিবশ দেহে পাহাড়ের গা ধ’রে উঠে দাঁড়িয়ে প্রাণপণে সে ব’লে

৪০