পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চনদের তীরে

আমার পক্ষই অবলম্বন করত, নন্দ যুদ্ধ করলেও জিত্‌তে পারত না। তারপর একবার সিংহাসনে বসতে পারলেই আমি আমার স্বাধীনতা ঘোষণা করতুম। তখন স্বদেশ থেকে অত দূরে— পূর্বভারতের প্রায় শেষ-প্রান্তে গিয়ে প’ড়ে, আমার বিপুল বাহিনীর সামনে গ্রীকদের কি শোচনীয় অবস্থা হ’ত, বুঝতে পারছ কি? আমি কেবল ভারতীয় যুদ্ধরীতিতে নয়, গ্রীক যুদ্ধরীতিতেও অভিজ্ঞ। গ্রীকদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হ’লে আমি তাদের রীতিই গ্রহণ করতুম। আরো একটা ভাববার কথা আছে। আজ গ্রীকরা দলে ভারি বটে, কিন্তু তারা যখন কাবুল থেকে সুদূর মগধে গিয়ে পৌঁছত, তখন পথশ্রমে আর ধারাবাহিক যুদ্ধের ফলে তাদের অর্ধেকেরও বেশী সৈন্য মারা পড়ত। সে অবস্থায় ইচ্ছা থাকলেও তারা আমার স্বাধীনতায় বাধা দিতে সাহস করত না।......এখন বুঝলে সুবন্ধু, কেন আমি গ্রীক দস্যুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে গিয়েছিলুম? আমি চেয়েছিলুম কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে!”

 সুবন্ধু বললে, “আপনার অসাধারণ বুদ্ধি দেখে বিস্মিত হচ্ছি। কিন্তু আলেকজাণ্ডার কি আপনাকে সাহায্য করতে রাজি হয়েছে?”

 —“আলেকজাণ্ডার অত্যন্ত চতুর ব্যক্তি, বোধহয় আমার মনের কথা ধ’রে ফেলেছেন। গর্বিত স্বরে আমাকে বলেছেন ‘চন্দ্রগুপ্ত, আমি যখন মগধ আক্রমণ করবো, নিজের ইচ্ছাতেই করবো। তোমার সাহায্য অনাবশ্যক।’ ধূর্ত যবন ফাঁদে পা দিলে না।”

 —“এখন আপনি কোথায় চলেছেন?”

 —“মগধের রাজধানী পাটলি পুত্রে।,,

 —“পাটলিপুত্রে!”

 -“হাঁ। শত্রুর কাছে যাচ্ছি ব’লে বিস্মিত হোয়ো না। এক গুপ্তচরের মুখে খবর পেলুম, মগধের প্রজারা নন্দের অত্যাচার আর

৭০