পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নবম পরিচ্ছেদ

আনন্দের অশ্রুজল

 “সেনাপতি, এই সামান্য ব্যাপার নিয়ে আপনাকে আর আমাদের সঙ্গে কষ্ট ক’রে আসতে হবে না! আমরাই আপনার আদেশ পালন করতে পারবো।”

 —“না বসুমিত্র, ব্যাপারটাকে তোমরা সামান্য মনে কোরো না। আমরা শৃগাল মারতে নয়, যাচ্ছি সিংহ শিকার করতে! আমরা একবার বিফল হয়েছি আবার বিফল হ’লে আমার মান আর রক্ষা পাবে না। ঘোড়ায় চড়ো, অগ্রসর হও।”

 একশোজন সওয়ার চালিয়ে দিলে একশো ঘোড়াকে! একশো ঘোড়ার খুরের শব্দে রাজপথ যেন জীবন্ত হয়ে উঠল—নিবিড় মেঘের মতো ধূলায় ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে গেল চতুর্দিক এবং সৈনিকদের বর্মে বমে জ্বলতে লাগল শত সূর্যের চমক!

 অরণ্যের বক্ষ ভেদ ক’রে চ’লে গিয়েছে প্রশস্ত সেই পথ। মাঝে মাঝে গ্রাম। সৈনিকদের ঘোড়া এত দ্রুত ছুটেছে যে মনে হচ্ছে, গ্রামগুলো যেন কৌতূহলের আগ্রহে কাছে এসেই আবার সশস্ত্র সওয়ারদের দেখে ভয়ে দূরে পালিয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি!

 প্রায় ক্রোশ-তিনেক পরে পথটা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে তিন দিকে চ’লে গিয়েছে! বসুমিত্র যাঁকে সেনাপতি ব’লে সম্বোধন করেছিল হঠাৎ তিনি ঘোড়ার লাগাম টেনে ধ’রে হাত তুলে চেঁচিয়ে বললেন, “সবাই ঘোড়া থামাও!”

 একশো ঘোড়া দাঁড়িয়ে পড়ল।

৮১