পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্বাসঘাতকের মৃত্যুফাঁদ

 চাণক্য অল্পক্ষণ চিন্তা ক’রে বললেন, “বুঝেছি। শশীগুপ্ত চায় আলেকজাণ্ডারের পদ্ধতি অবলম্বন করতে। অর্থাৎ সে আগে আমাদের ধ্বংশ করবে, তারপর অক্রমণ করবে মহারাজা পুরুকে।”

 চন্দ্রগুপ্ত অধীর স্বরে বললেন, “আদেশ দিন গুরুদেব, আমরা সজ্জিত হই।”

 সে কথা কাণে না তুলে চাণক্য বললেন, “আচ্ছা সুবন্ধু, শশীগুপ্ত বোধহয় এখনো জানতে পারে নি যে, মহারাজা পুরু ও এইদিকে আসছেন?”

 —“না আচার্য, শশীগুপ্ত এপথে যাত্রা করবার দুদিন পরে আমাদের মহারাজা রাজধানী থেকে বেরিয়েছেন, সুতরাং মহারাজা আসবার আগেই শশীগুপ্ত এখানে এসে পড়বে।”

 —“শশীগুপ্ত এখন কত দূরে আছে?”

 —“তাদের আর আমাদের মাঝখানে আছে মাত্র একদিনের পথ।”

 ——“তাহ’লে চন্দ্রগুপ্ত, কালকেই তোমার সঙ্গে শশীগুপ্তের দেখা হবে।,

 চন্দ্রগুপ্ত দৃঢ় স্বরে বললেন, “আদেশ দিন গুরুদেব, আমরাই এগিয়ে গিয়ে শশীগুপ্তকে আক্রমণ করি। সেনাপতি—”

 চাণক্য ক্রুদ্ধ স্বরে বললেন, “চন্দ্রগুপ্ত, বালকের মতো ব্যস্ত হয়ো না! এই ব্যস্ততার জন্যই তুমি একবার মগধ আক্রমণ করতে গিয়ে পরাজিত হয়েছ, কিন্তু এবারের সুযোগ ত্যাগ করলে আর কোনদিন তুমি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না!”

 চন্দ্রগুপ্ত কুণ্ঠীত স্বরে বললেন, “গুরুদেব, এ সুযোগ, না দুর্যোগ?”

 —“সুযোগ চন্দ্রগুপ্ত, দুর্লভ সুযোগ! মহা-ভাগ্যবানের জীবনেও এমন সুযোগ একবার মাত্রই আসে।”

 —“ক্ষমা করবেন গুরুদেব, আপনার কথার অর্থ আমি বুঝতে

৯৭