পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চনরে তীরে

গোপনে প্রস্তুত হ’তে গেলে যথেষ্ট সময়ের দরকার। পুরু যতদিন না বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ততদিন—”

 চাণক্যের কথা শেষ হবার আগেই সভার দ্বারপথের কাছে একটা গোলমাল উঠল। তারপরেই দেখা গেল, দুই হাতে প্রহরীদের ঠেলে সভার ভিতর ছুটে এল ধূলি-ধূসরিত দেহে সুবন্ধু!

 চন্দ্রগুপ্ত ব্যগ্র কণ্ঠে বললে, “এই যে সুবন্ধু!”

 সুবন্ধু চীৎকার ক'রে বললে “মহারাজ! বিশ-হাজার গ্রীক সৈন্য আর ত্রিশ হাজার ভারতীয় সৈন্য নিয়ে শশীগুপ্ত আপনাকে আক্রমণ করতে আসছে! প্রস্তুত হোন, শীঘ্র প্রস্তুত হোন!”

 চন্দ্রগুপ্ত সচকিত ভাবে আসন থেকে নেমে পড়লেন, সভাসদরা সবিস্ময়ে উঠে দাঁড়ালেন—অটল মূর্তির মতো নিজের আসনে ব’সে রইলেন কেবল চাণক্য ৷

 চন্দ্রগুপ্ত উচ্চকণ্ঠে ডাকলেন, “সেনাপতি!”

 সেনাপতি এগিয়ে এসে অভিবাদন ক’রে বললেন, “আদেশ দিন মহারাজ!”

 —“এখনি তুর্যধ্বনি ক’রে—”

 চাণক্য বাধা দিয়ে তেমনি শান্ত স্বরেই বললেন, “একটু অপেক্ষা করো চন্দ্রগুপ্ত, অতটা ব্যস্ত হোয়ো, না। সুবন্ধু, মহারাজা পুরুর “খবর কি?”

 সুবন্ধু উৎফুল্ল স্বরে বললে, “আচার্য, মহারাজা পুরু বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন, তাঁর রাজধানী থেকে গ্রীকরা বিতাড়িত হয়েছে। মহারাজ। নিজে সসৈন্যে আপনাদের সঙ্গে যোগ দেবার জন্যে দ্রুতগতিতে এগিয়ে আসছেন— আমি তাঁরই অগ্রদূত!”

 চাণক্য বললেন, “শশীগুপ্ত এ সংবাদ জানে?”

 —“মহারাজের বিদ্রোহের খবর পেয়েই চতুর শশীগুপ্তও গ্রীকদের নিয়ে আপনাদের আক্রমণ করতে আসছে!”

৯৬