সফলও হ’য়েছিলেন। ১৯২১ খৃঃ ধরপাকড়ের সময়ে স্থির সঙ্কল্প করেছিলেন যে একে একে তাঁর পরিবারে প্রত্যেককে কারাগৃহে পাঠাবেন এবং সঙ্গে সঙ্গে নিজেও আসবেন। নিজের ছেলেকে জেলে না পাঠালে পরের ছেলেকে তিনি পাঠাতে পারবেন না—এ রকম বিবেচনা তাঁর আদর্শের দিক থেকে খুব নিম্নস্তরের বলে আমার মনে হয়। আমরা জানতুম যে, তিনি শীঘ্রই ধরা পড়বেন, তাই আমরা বলেছিলুম যে তার গ্রেপ্তারের পূর্ব্বে তাঁর পুত্রের যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নাই এবং একজন পুরুষ বর্ত্তমান থাকতে আমরা কোনও মহিলাকে যেতে দিব না। অনেকক্ষণ ধরে তর্ক-বিতর্ক চলে, কোনও সিদ্ধান্ত হয় না—আমরা কোনও মতে তাঁর কথা স্বীকার করতে পারিনি। শেষে তিনি বলেন, “এটা আমার আদেশ— পালন করতে হবে।” তারপর প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা সে আদেশ শিরোধার্য্য করলুম।
তাঁর জ্যেষ্ঠা কন্যা বিবাহিতা—তাঁর উপর তাঁর অধিকার বা দাবী নাই, সেইজন্য তাঁকে পাঠাতে পারলেন না। কনিষ্ঠা কন্যা তখন বাগ্দত্তা—তাঁকে পাঠান উচিত কিনা— সে বিষয়ে ভীষণ তর্ক হ’ল, তিনি পাঠাতে চান—কন্যারও যাবার অত্যন্ত ইচ্ছা, কিন্তু অন্যান্য সকলের মত—তাঁকে পাঠান উচিত নয়। কারণ একেই তিনি অসুস্থ, তারপর আবার বাগ্দত্তা—শীঘ্রই বিবাহ হবার কথা। এ ক্ষেত্রে দেশবন্ধু সাধারণের মত স্বীকার করতে বাধ্য হলেন। শেষে সিদ্ধান্ত হ’ল সর্ব্ব প্রথমে ভোম্বল যাবে—তারপর বাসন্তী দেবী ও উর্মিলা দেবী যাবেন—এবং তাঁর ডাক যে মুহূর্ত্তে আসবে তখনই যাবার জন্য তিনি প্রস্তুত থাকবেন।
বাহিরের ঘটনা সকলেই জানে। কিন্তু এই ঘটনার মূলে—লোকচক্ষুর অন্তরালে যে ভাব, যে আদর্শ, যে প্রেরণা নিহিত রয়েছে—তার সন্ধান কয়জন রাখে? তাঁর সাধনা শুধু নিজেকে নয়—তাঁর সাধনা তাঁর সমস্ত পরিবারকে নিয়ে। আমার মনে হয় যে, মহাপুরুষের
১৬১