পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পদাবলী-মাধুর্য্য
১২১

ইহার তাদৃশ প্রচলন ছিল কিনা সন্দেহ। ‘কবিবল্লভ’ বলিতে এদেশে কিংবা মিথিলায় পূর্ব্বে কখনও বিদ্যাপতিকে বুঝাইত না। তবে আমাদের দেশে যাঁহারা কোন প্রাচীন কাব্য সম্পাদন করেন, তাঁহারা বিচারবুদ্ধি তাদৃশ ব্যবহার করেন না—যতটা গ্রন্থের কলেবর বৃদ্ধি করিতে ব্যগ্র হন। সুতরাং যদি পূর্ব্বের কোনো সংস্করণে ভুলক্রমে কোন সম্পাদক কোন পদ কবি-বিশেষের খাতায় লিখিয়া ফেলেন, পরবর্ত্তী কবিরা কিছুতেই তাহা বাদ দিতে স্বীকৃত হন না, পাছে পূর্ব্ব সংষ্করণ ছোট হইয়া যায়। এই ভাবে গতানুগতিকদের প্রসাদে কবিবল্লভ উপাধিক বাঙালী-কবির পদটি মিথিলার বিদ্যাপতির খাতায় উঠিয়াছে। বিদ্যাপতির মত শ্রেষ্ঠ কবির মর্য্যাদা এই একটি পদে বাড়ে নাই, কিন্তু কবিবল্লভ নামক বাঙালী-কবি এই পদটি হারাইয়া হৃতসর্ব্বস্ব হইয়াছেন। শুধু কবিবল্লভ নহে, রায়শেখর এবং অন্যান্য কয়েক জন বাঙালী কবিকে নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত মহাশয় বিদ্যাপতির নামে চালাইয়াছেন। যখন তিনি মিথিলায় বিদ্যাপতির পদ-সংগ্রহ করেন, তখন একদিন আমাকে বলিয়াছিলেন, মিথিলার কোন পুঁথিতেই তিনি “জনম অবধি হাম রূপ নেহারলু” পদটি পান নাই, অথচ বিদ্যাপতির ভক্ত টীকাকার তাঁহার সংস্করণে পূর্ব্ববর্ত্তী সম্পাদকদের অনুসরণ করিয়া বিদ্যাপতির পদ বলিয়াই উহা চালাইয়াছেন। যিনি বঙ্গের বৈষ্ণবকবিকুলচূড়ামণি গোবিন্দ দাসকে অজ্ঞাতনামা মৈথিল কবি গোবিন্দ দাস ভ্রম করিয়া তাঁহার সমন্তগুলি উৎকৃষ্ট পদ মিথিলায় সংগ্রহ-পুস্তকে সঙ্কলিত করিবার প্রেরণা দিয়াছেন, তাঁহার পক্ষে কবিবল্লভ ও রায়শেখরকে এইভাবে বিদ্যাপতির পদাবলীতে স্থান দেওয়ায় আমরা দুঃখিত হইয়াছি, কিন্তু আশ্চর্য্য হই নাই। বর্ত্তমান দ্বারবঙ্গাধিপ সেই অজ্ঞাতনাম মৈথিল-কবি গোবিন্দ দাসের বংশধর, সুতরাং এই সকল