উপাদানে গড়িয়াছিলেন, তাহা তিনি অকালে ভাঙ্গিলেন কোন্ প্রাণে? গোলাপটি কেনই ফোটে, কেনই বা ঝরিয়া পড়ে কে বলিবে? কোন বিশিষ্ট কীর্ত্তনীয়ার দলের একটি লোক সেই সময়ে উপস্থিত ছিলেন, তিনি বলিলেন—গৌরদাসের কীর্ত্তনের সমকক্ষতা করিতে পারে, এরূপ লোক এ যুগে কেহ নাই। যাহারা আছেন, তাঁহাদের মধ্যে যিনি সর্ব্বশ্রেষ্ঠ, তিনিও গৌরের পায়ের কাছে বসিয়া অনেক বৎসর কীর্ত্তন শিখিতে পারেন।
শুনিয়াছি, গৌরদাস বাঙালাদেশে খোলের ওস্তাদ ছিল, তাহার মত খোল-বাজিয়ে আর কেহ ছিল না। সংগীতাচার্য্য বলিয়াও তাহার খ্যাতি ছিল, এ সকল বিষয় আমার অধিকার-বহির্ভূত। কিন্তু তাহার মত ভাবাবিষ্ট গায়ক আমি আর দেখি নাই। সে কৃষ্ণপ্রেম হরিলুটের মত বিলাইয়া শ্রোতাকে যাদুমত্রে ভুলাইয়া, ঘণ্টার পর ঘণ্টা আসরে মোহাবিষ্ট করিয়া রাখিতে পারিত এবং অশ্রুর প্লাবনে সকলকে ভাসাইয়া লইয়া যাইবার শক্তি রাখিত।
৯৷ হারাই-হারাই
চণ্ডীদাসের রাখা এক দুর্ল্লভ রত্ন পাইয়াছিলেন, সে রত্ন তিনি কোথায় রাখিবেন, এমন নিরাপদ্ স্থান খুঁজিয়া পান নাই। চৈতন্যদেব বার বার তাঁহাকে পাইতেন, বার বার তাঁহাকে হারাইতেন। রাধা যত দুঃখ পাইতেন, যত দূরেই যাইতেন, কৃষ্ণের মুখখানি মনে পড়িলে তাঁহার সমস্ত কষ্ট দূর হইত,
যথা তথা যাই, আমি যত দূর চাই,
চাঁদ মুখের মধুর হাসে তিলেকে জুড়াই। (চ)
ননদী ও শ্বাশুড়ীর গঞ্জনা, প্রতিবাসীর বিদ্রুপ—এ সমস্তই সে চাঁদমুখ