পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিনা আহবানে যেচে যেন বাড়ীতে উড়ে আসে মাসে মাসে বেতন প্রসব করা চাকরুির্যাপী সোনার হংসী । উমা টের পায় কারসাজিটা অজিতের । সে বিগড়ে গিয়ে সোজােসজি প্রত্যাখ্যান করতে পারে ভেবে, অজিত সামনে থেকে চাকরিটা তাকে করিয়ে দেয়নি। --নিজে আড়ালে থেকে ব্যবস্থা করেছে । বিলেত ঘারিয়ে এনে বিদাষী করে সারাজীবন খাইয়ে পরিয়ে সখে রাখার দায় মেনে নিয়ে, বিয়ে-না-করা স্বামী হয়ে-সব দায় থেকে রেহাই পেয়েও আঞ্জত ৩৫ও স্বস্থিত পাচ্ছে না ! ভিতরে বিবেকের পোকা কামড়াচ্ছে ! অথবা - ? উমা ইতস্ততঃ করে-ছটফট করতে করতে ভাবে } অজিতের দয়ার দান চাকরিটা নেবে ? এ চাকরি করতে গিয়ে মনের পোকার কামড়ে তার যদি রাতের ঘােম নস্ট হয়ে যায়-নিজেকে বাজারের বিশেষ এক শ্রেণীর মেয়েমানষে মনে করে যদি দিনরাত ঘোষায় তায় গা ঘিন ঘন করে ? হরিপ্রসন্ন ক্লিাস্টমখে বহকাল পরে হাসি ফোটাবার চেস্টা করতে করতে বলে ; অ্যাপিলকেশন পাঠিয়ে দিয়েছিস ? আমায় একবার দেখালি না ? তখনও উমা দরখাস্ত পেশ করেনি-ইতস্ততঃ করছে। কিন্ত বাপের কাছে সেকথাটা ফশি করে আর লাভ কি ? বড়ো মানষ - হয়তো হাটফেল করে বসবে ! সে তাচ্ছিল্যাভরে বলে, ও আবার তোমায় কি দেখাব ! একটা অ্যাপিলকেশন কি লিখতে শিখিনি ? হরিপ্রসন্ন নিজের মনে বলে যায়, চন্দর সত্যি মান রেখেছে । পেটে একটু বিদ্যে ঢাকোতে, রোজ দাতিন ঘণ্টা কি যন্ধটাই করতাম-কলেজের পড়া পড়বা কি ! কতবার তোকে বলেছি না। ফাস্ট হয়ে চলেছিস বলে অহঙ্কার কারিস নে উমা ? কত ছেলেমেয়ে আছে, অবস্থার ফেরে তোর সাথে পালা দিতে পারছে না । মখে আবার হাসি ফোটাবার চেষ্টা করে বলে, চন্দরকে পড়িয়ে পড়া চালাতে হত, নইলে তোর বাবাও কি পরীক্ষায় ফাস্ট হতে পারত না ভেবেছিস ! উমা তব, দ্বিধা করে । হরিপ্রসনের পরোনো ছাত্র চন্দ্রনাথ নিজের অফিসে চাকরিটা তাকে দিচ্ছে বটে, কিন্ত, উমার তো অজানা নেই আসলে চাকরিটী গাঁছিয়ে দিচ্ছে কে ! চন্দ্রনাথের পত্র আসে হরিপ্রসক্ষেনের নামে । তার মেয়েকে অফিসে একটা চাকরির জন্য দরখাস্ত করতে লিখে পাঠিয়েছিলএখনো দরখাস্ত পৌছয়নি কেন ? হরিপ্রসন্ন ছিল তার ছেলেবেলার মাস্টার-তাই সে তার এই উপকারটা করছে। দশদিনের মধ্যে উমা গিয়ে অ্যাপ্লিকেশন দাখিল করে না এলে সে অগত্যা বাধা হয়েই অন্য কাউকে কাজ দিয়ে দেবে। কয়েকটা প্রশনও জিজ্ঞাসা করেছে। চন্দ্রনাথ । RS