পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অফিসের গাড়ী { এতক্ষণ যেন এদিকে খেয়াল ছিল না, এবার বািকটা ধড়াস করে ওঠে অনিলের । খোদ বড় সাহেবের গাড়ী । সাহেবকে জিজ্ঞাসা না করেই এতাদরে ছটিয়ে এনেছে । গলির মোড়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছে গাড়ীটা । কাতিকের বেী বিষ খেয়েছে শানে তারও কি মাথা খারাপ হয়েছিল, সে-ও কি ঝোঁকের মাথায় বড় সাহেবের রোষের বিষ পান। করল ? এ বাজারে চাকরি যাওয়া আর সপরিবারে বিষ খাওয়ার মধ্যে তফাত কি “ কাতিকের বেী যখন মরূবে না, এবার তার তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়াই ভাল । ডাক্তারকে সে জিজ্ঞাসা করে, বেচে যাবে, না ? ডাক্তার বলে, হ্যাঁ! বাজে ভেজাল বিষ, একটু বেশি পরিমাণে খেয়েছে বলেই হাঙ্গামা । নইলে একবার বমি করিয়ে দিলেই চুকে যেত । ঃ কাতিক তই থাক। আমি গেলাম। অফিসে সে যখন ফিরল। তখন চা-পানের বিরামটিক প্রায় কাবার হয়ে এসেছে । অনিলকে দেখা মান্ত সকলে কলরব করে তাকে ঘিরে ধরে, টের পাওয়া যায় সকলের কৌতমহল রীতিমত উত্তেজনায় দাঁড়িয়ে গেছে । সাহেব রেগে আগমন হয়ে গেছে, কানাই মােখাজ্যে ততোধিক। অনিল আর কাতিক গাট গট করে গিয়ে সাহেবের গাড়ীতে উঠল, গাড়ীটাও হস করে বেরিয়ে গেল-এর কেশী কেউ কিছর বলতে পারছে না বলেই কানাই মােখাজ্যে চটেছে বেশী । এমন একটা উদ্ভট ব্যাপার ঘটে গেল অফিসে আর সবাই বলছে আসল ব্যাপার কেউ কিছ জানে না ! দাবি-দাওয়া নিয়ে অফিসে কত-ব্যপ্তিদের সঙ্গে মনোমালিন্য যখন দানা বাঁধছে। তখন এরকম ঘটনা ঘটা আর সকলের একজোট হয়ে অজ্ঞতার ভান করা-এর পিছনে নিশ্চয় খারাপ মতলব আছে, গারতের ষড়যন্ত্র আছে ! অনিল সব খালে বলে, বলতে বলতে লক্ষ্য করে কানাই মােখাজ্যে সাহেবের খাস কামরা থেকে বেরিয়ে তার দিকে তাকাতে তাকাতে নিজের খাস কামরায় চলে গেল । সন্ধীর খানিকটা জানাতে পারত- অন্তত এটােক খবর দিতে পারত যে টেলিফোনে কাতিকের বৌয়ের বিষ খাওয়ার খবর পেয়েই অনিল কাতিককে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে গেছে । অলপ বয়স, ভয় পেয়ে সে একেবারে মািখ বীজে ছিল। ব্যাপার শনে সকলেই তারিফ করে অনিলকে । কয়েকজন তার পিঠ চাপড়ে দেয়। সন্ধীর জিজ্ঞাসা করে, কাতিকের বৌটা বিষ খেল কেন ? অনিল বলে, অত খািটয়ে জিজ্ঞেস করিনি। ঝগড়াঝাঁটি হয়েছিল । বিরাম খতম হয়। কাজ শরা হয় । অনিলের ডাক পড়ে না। কাতিক ফেরেনি কিন্ত, সাহেবের গাড়ী আর অনিল ফিরেছে দেখে কি খানিকটা প্ৰতি পেয়েছে কানাই 96.