বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পলাতকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পলাতক

অন্তরে মোর লুকিয়ে ছিল কী যে সে ক্রন্দন
জানব এমন পাই নি অবকাশ।
প্রাণের উপবাস
সংগোপনে বহন ক’রে কর্মরথে
সমারোহে চলতেছিলেম নিষ্ফলতার মরুপথে।

তিনটে চারটে সভা ছিল জুড়ে আমার কাঁধ;
দৈনিকে আর সাপ্তাহিকে ছাড়তে হ’ত নকল সিংহনাদ;
বীডন কুঞ্জে মীটিং হলে আমি হতেম বক্তা;
রিপোর্ট্ লিখতে হ’ত তক্তা তক্তা;
যুদ্ধ হত সেনেট-সিণ্ডিকেটে;
তার উপরে আপিস আছে— এমনি ক’রে কেবল খেটে খেটে
দিন রাত্রি যেত কোথায় দিয়ে।
বন্ধুরা সব বলত, ‘করছ কী এ!
মারা যাবে শেষে!’
আমি বলতেম হেসে,—
‘কী করি ভাই, খাটতে কি হয় সাধে!
একটু যদি ঢিল দিয়েছি অমনি গলদ বাধে,
কাজ বেড়ে যায় আরো—
কী করি তার উপায় বলতে পারো?’
বিশ্বকর্মার সদর আপিস ছিল যেন আমার ’পরেই ন্যস্ত,
অহোরাত্রি এমনি আমার ভাবটা ব্যতিব্যস্ত।

৬৮