প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করিবে না, কারণ তাহারা কাহারো সাতেও থাকে না, পাঁচেও থাকে না; এবং পরের কথায় কথা কহা তাহারা ভালই বাসে না। সে যাই হউক, রমেশ কিন্তু আজ নিঃসংশয়ে বুঝিল, পল্লীবাসী দরিদ্র প্রজার উপর অসঙ্কোচে অত্যাচার করিবার সাহস ইহারা কোথায় পায়। এবং কেমন করিয়া দেশের আইনকেই ইহারা কসাইয়ের ছুরির মত ব্যবহার করিতে পারে। সুতরাং অর্থবল এবং কূটবুদ্ধি একদিকে যেমন তাহাদিগকে রাজার শাসন হইতে অব্যাহতি দেয়, মৃতসমাজও তেম্নি অন্যদিকে তাহাদের দুষ্কৃতির কোন দণ্ডবিধান করে না। তাই, ইহারা সহস্র অন্যায় করিয়াও, সত্যধর্ম্মবিহীন মৃত পল্লী-সমাজের মাথায় পা দিয়া এমন নিরুপদ্রবে এবং যথেচ্ছাচারে বাস করে। আজ, তাহার জ্যাঠাইমার কথাগুলো বারংবার মনে পড়িতে লাগিল। সে দিন সেই যে তিনি মর্ম্মান্তিক হাসি হাসিয়া বলিয়াছিলেন, “রমেশ, চুলোয় যাক্ গে তোদের জাত-বিচারের, ভাল-মন্দর ঝগড়াঝাঁটি; বাবা, শুধু আলো জ্বেলে দে রে, শুধু আলো জ্বেলে দে। গ্রামে গ্রামে লোক অন্ধকারে কাণা হয়ে গেল; একবার কেবল তাদের চোখ মেলে দেখ্বার উপায়টা ক’রে দে, বাবা! তখন আপনি দেখ্তে পাবে তারা, কোন্টা কালো, কোন্টা ধলো।” তিনি আরও বলিয়াছিলেন,—“যদি ফিরেই এসেছিস্ বাবা, তবে চ’লে আর যাসনে। তোরা মুখ ফিরিয়ে থাকিস্ বলেই তোদের পল্লী-জননীর এই দুর্দ্দশা!” সত্যই ত! সে