বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
১৩২


চলিয়া গেলে ত ইহার প্রতিকারের লেশমাত্র উপায় থাকিত না!

 রমেশ নিশ্বাস ফেলিয়া মনে মনে কহিল,—“হায় রে! এই আমাদের গর্ব্বের ধন—বাঙালার শুদ্ধ, শান্ত, ন্যায়নিষ্ঠ পল্লী-সমাজ!” একদিন হয় ত, যখন ইহার প্রাণ ছিল, তখন দুষ্টের শাসন করিয়া, আশ্রিত নর-নারীকে সংসারযাত্রার পথে নির্ব্বিঘ্নে বহন করিয়া লইয়া যাইবারও ইহার শক্তি ছিল। কিন্তু আজ ইহা মৃত; তথাপি অন্ধ পল্লীবাসীরা এই গুরুভার বিকৃত শবদেহটাকে পরিত্যাগ না করিয়া, মিথ্যা-মমতায় রাত্রি-দিন মাথায় বহিয়া বহিয়া, এমন দিনের-পর-দিন ক্লান্ত, অবসন্ন ও নির্জ্জীব হইয়া উঠিতেছে,—কিছুতেই চক্ষু চাহিয়া দেখিতেছে না। যে বস্তু আর্ত্তকে রক্ষা করে না, শুধু বিপন্ন করে, তাহাকেই সমাজ বলিয়া কল্পনা করার মহাপাপ তাহাদিগকে নিয়ত রসাতলের পানেই টানিয়া নামাইতেছে। রমেশ আরও কিছুক্ষণ স্থিরভাবে বসিয়া থাকিয়া, সহসা যেন ধাক্কা-খাইয়া উঠিয়া পড়িল, এবং তৎক্ষণাৎ সমস্ত টাকাটার একখানা চেক লিখিয়া, গোপাল সরকারের হাতে দিয়া কহিল,—“আপনি সমস্ত বিষয় নিজে ভাল ক’রে জেনে, টাকাটা জমা দিয়ে দেবেন, এবং যেমন ক’রে হোক, পুনর্বিচারের সমস্ত বন্দোবস্ত ঠিক ক’রে আস্‌বেন। এমন ভয়ঙ্কর অত্যাচার কর্‌বার সাহস তাদের আর যেন কোন দিন না হয়।” চেক হাতে করিয়া গোপাল সরকার ও ভৈরব উভয়ে কিছুক্ষণ যেন