বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৮৭
পল্লী-সমাজ


এ আলো আর নিব্‌বে না। জ্যাঠাইমা বল্‌ছিলেন, তুমি দূর থেকে এসে বড় উঁচুতে ব’সে কাজ করতে চেয়েছিলে বলেই এত বাধা-বিঘ্ন পেয়েচ। আমরা নিজেদের দুষ্কৃতির ভারে তোমাকে নাবিয়ে এনে এখন ঠিক জায়গাটাতেই প্রতিষ্ঠিত ক’রে দিয়েচি। এখন তুমি আমাদের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েচ বলেই তোমার ভয় হচ্চে; আগে হ’লে এ আশঙ্কা তোমার মনে ঠাঁই পেত না। তখন তুমি গ্রাম্য-সমাজের অতীত ছিলে, আজ তুমি তারই একজন হয়েচ। তাই এ আলো তোমার আর ম্লান হবে না—এখন প্রতিদিনই উজ্জ্বল হ’য়ে উঠ্‌বে।” সহসা জ্যাঠাইমার নামে রমেশ উদ্দীপ্ত হইয়া উঠীল—কহিল,—“ঠিক জানো কি রমা, আমার এই দীপের শিখাটুকু আর নিবে যাবে না?” রমা দৃঢ়কণ্ঠে কহিল,—“ঠিক জানি। যিনি সব জানেন, এ সেই জ্যাঠাইমার কথা। এ কাজ তোমারি। আমার যতীনকে তুমি হাতে তুলে নিয়ে, আমার সকল অপরাধ ক্ষমা ক’রে আজ আশীর্ব্বাদ ক’রে আমাকে বিদায় দাও রমেশদা’, আমি যেন নিশ্চিত হ’য়ে আমার স্বামীর কাছে যেতে পারি।” ব্রজ্রগর্ভ মেঘের মত রমেশের বুকের ভিতরটা ক্ষণে ক্ষণে চমকিয়া উঠিতে লাগিল; কিন্তু, সে মাথা হেঁট করিয়া স্তব্ধ হইইয়া বসিয়া রহিল। রমা কহিল,—“আমার আর একটা কথা তোমাকে রাখতে হবে। বল রাখ্‌বে?” রমেশ মৃদুকণ্ঠে কহিল,—“কি কথা?” রমা বলিল,—“আমার কথা নিয়ে বড়দা’র সঙ্গে তুমি কোন দিন ঝগড়া কোরো না।” রমেশ বুঝিতে না পারিয়া