পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
পাখীর কথা

করিবার পূর্ব্বে প্রাগৈতিহাসিক যুগে যাযাবর মানব যখন গোধন লইয়া দলে দলে দেশ-দেশান্তরে বিচরণ করিত, আদিম মানব যখন কৃষিবিদ্যার রহস্য উদ্ঘাটিত করিতে সমর্থ হয় নাই, যখন তাহাদের কেবলমাত্র সম্পত্তি ছিল—কয়েকটি পালিত পশু, সেই pastoral যুগে উত্তরকুরু-প্রদেশস্থ আমু নদীর তীর হইতে আরম্ভ করিয়া সমস্ত মধ্য-এসিয়ার মধ্য দিয়া বিচরণ করিয়া ঋতু-পরিবর্ত্তনের সঙ্গে সঙ্গে উত্তর হইতে দক্ষিণে এবং দক্ষিণ হইতে উত্তর-দিকে গমনাগমনে কেমন করিয়া তাহারা তাহাদিগের পালিত পশুগুলিকে রক্ষা করিতে সমর্থ হইত তাহার সন্তোষজনক উত্তর যদি চাও, তাহা হইলে শুধু Meteorologistএর কাছে গেলে চলিবে না, তোমাকে Ornithologistএর শরণাপন্ন হইতে হইবে। দেখিতে পাইবে যে, যুগযুগান্তর ধরিয়া সমস্ত মানবের ইতিহাস সাক্ষ্য দিতেছে যে, মানব-সমাজের প্রতিষ্ঠা ও রক্ষাকার্য্যে বিহঙ্গজাতি তাহার প্রধান সহায়। কয়েক বৎসর পূর্ব্বে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বনামধন্য Imperialist সার্ হ্যারি জনষ্টন্ এই পশুরক্ষা-প্রসঙ্গে লিখিয়াছেন,—“Birds are the greatest allies that man has possessed in his agelong warfare against insects and the more harmful forms of ticks, fresh-water crustacean, centipede, trematode, worm, and leech[১]”। মানবপালিত পশুজীবনের সহিত এই চিরন্তন কীট-বিহঙ্গ-বিরোধের সম্পর্ক কি তাহা বোধ হয় আরও একটু খোলসা করিয়া বলা আবশ্যক।

* * * * * *

 সমাজবদ্ধ মানবের অর্থনীতি বা বার্ত্তাশাস্ত্রের সহিত বিহঙ্গজীবনের একটা নিগূঢ় ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ আছে, এ বিষয়ে পক্ষিতত্ত্ববিদ্‌গণের মধ্যে

  1. The Asiatic Quarterly Review, April, 1913.