পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় ভাগ
৯৯

কার্য্যারম্ভ করিলে অপেক্ষাকৃত অল্প সময়ে অধিকতর সুফল পাওয়া যাইতে পারে। জমিতে সার দিতে হইলে রাসায়নিক পণ্ডিতের সাহায্য যদি সকল সময়ে লইতে হয়, তাহা হইলে পয়সা খরচের অন্ত থাকে না। Economic হিসাবে অন্য ভাল উপায় থাকিলে, যদি তাহাতে বাস্তবিক অপেক্ষাকৃত কম খরচে ভাল ফল পাওয়া যায়, তবে কোনও কৃষিজীবী সেই অল্পব্যয়সাপেক্ষ উপায়টিকে উপেক্ষা করিয়া বহু ব্যয়সাধ্য রাসায়নিক প্রক্রিয়ার পন্থা অবলম্বন করিবে কেন? কি উপায়ে সহজে জমিতে সার দেওয়া যায়, কেমন করিয়া উপ্ত বীজকে রক্ষা করিতে পারা যায়, অঙ্কুরোদ্গমের পরেও কেমন করিয়া নানা নৈসর্গিক শত্রুর কবল হইতে উদ্ধার করিয়া কৃষক তাহাকে বর্দ্ধিত করিয়া তুলে, এই সমস্ত বিষয়ের পর্য্যালোচনা করিতে গেলে পক্ষীকে বাদ দেওয়া চলে না। যদি রাজপুরুষেরা বৈজ্ঞানিক হিসাবে পাখী লইয়া কৃষককে কর্ম্মক্ষেত্রে নামাইয়া দেন, তাহা হইলে অপেক্ষাকৃত সহজ উপায়ে ও অল্প সময়ের মধ্যে একটা বড় রাষ্ট্রীয় সমস্যার সমাধান হইয়া যায়। মাটির মধ্যে কীটপতঙ্গ শস্যের বীজ নষ্ট করিতে প্রবৃত্ত হইলে বাছিয়া বাছিয়া এমন কতকগুলি পাখীকে সেইখানে ছাড়িয়া দিতে হইবে, যাহারা স্বভাবতঃ সেই সমস্ত কীটপতঙ্গের জাতশত্রু। বাছিয়া বাছিয়া পাখী ছাড়িয়া দেওয়ার কথায় যেন না মনে করেন যে, যেখানে কীটের উৎপাত অত্যন্ত অধিক, সেখানে খাঁচা হইতে পাখী বাহির করিয়া দিয়া সেগুলিকে নষ্ট করার পর আবার তাহাকে খাঁচায় পুরিয়া ফেলিতে হইবে। এ প্রকার ছেলেমানুষী ব্যবস্থা নিতান্তই হাস্যজনক। কথাটা এই যে, কতকটা প্রাকৃতিক নিয়মের বশে কতকটা বা মানুষের নিষ্ঠুরতার ফলে স্থানবিশেষে কোনও কোনও পাখী ধ্বংস প্রাপ্ত হয়, তখন কৃষিকার্য্যের বাধা জন্মাইবার জন্য যে সকল কীটের প্রাদুর্ভাব হয়, তাহাদিগকে সহজে নষ্ট করা এক প্রকায় দুঃসাধ্য