পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৮
পাখীর কথা

 ইদানীং সমস্ত সভ্য দেশের পণ্ডিতমণ্ডলীর মধ্যে এ সম্বন্ধে মতের ঐক্য দৃষ্ট হয়। বিশেষতঃ আজকাল যদিও পৃথিবীতে মহাকুরুক্ষেত্রাগ্নি নির্ব্বাপিত হইয়াছে, তথাপি ভস্মস্তূপের মধ্য হইতে বিধ্বস্ত দেশগুলিকে পুনর্গঠিত করিয়া তুলিবার জন্য এখনও সভ্য জগতে সমবেত মানবসমাজের সচেষ্ট উদ্যম দেখিতে পাইতেছি না; সকলেই কেবল মাত্র বড় বড় রাষ্ট্রীয় প্রশ্ন লইয়া ব্যস্ত। কোন্ দেশের সীমান্তরেখা প্রসারিত বা সঙ্কুচিত হইবে, কাহার কতগুলা জাহাজ বা সৈন্য থাকিবে, কাহার সঙ্গে বাণিজ্যব্যবসায়ে অবাধ আদানপ্রদান চলিতে দেওয়া যাইতে পারে—এই সকল বিষয় লইয়া এত দিন ধরিয়া নানা তর্ক বিতর্ক চলিতেছে। বেলজিয়মের পুনর্গঠন ও তাহার লুপ্ত শ্রীর উদ্ধার একান্ত আবশ্যক—এ কথা সকলেই বলিতেছেন বটে; কিন্তু সকলেরই মনে মনে এই প্রকার একটা বিশ্বাস আছে, যেন পরাজিত শত্রুর নিকট হইতে কিছু বেশী টাকা খেসারত-স্বরূপ আদায় করিয়া লইতে পারিলেই মজুর ও মিস্ত্রী লাগাইয়া আবার যেমনটি ছিল, সেইরূপ গড়িয়া তুলিতে পারা যাইবে। যেন শুধু মানুষ, টাকা ও কতকগুলা মানুষের আবিষ্কৃত কল হইলেই, সর্ব্বতোভাবে দেশলক্ষ্মীকে ফিরাইয়া আনিতে পারা যায়। এই প্রকার স্বদেশহিতচেষ্টার পশ্চাতে আমাদের প্রচণ্ড আত্মাভিমান প্রকাশ পাইতে পারে, কিন্তু বুদ্ধির প্রখরতা সম্বন্ধে বোধ হয় কিঞ্চিৎ সন্দেহ থাকিয়া যায়।

 কৃষির উন্নতি করিতে হইবে? রসায়ন-বিদ্যার সাহায্য লইলেই বোধ হয় কার্য্যটি সুসম্পন্ন করা যাইতে পারে—এই ধারণার বশবর্ত্তী হইয়া নানা উপায়ে Intensive Cultivationএর ব্যবস্থা করিবার জন্য Nitrogen প্রভৃতি রাসায়নিক পদার্থ যোগাইতে পারিলেই আমরা সাধারণতঃ মনে করি যে, বৈজ্ঞানিক উপায়ে যত দূর সম্ভব কার্য্যনির্ব্বাহের চেষ্টা করা গেল। কিন্তু রসায়নবিদ্যার পার্শ্বে যে এ ক্ষেত্রে বিহঙ্গতত্ত্বকে আসন দিতে হইবে, তাহা মনে রাখিয়া