করে। পাখীকে আট্কাইয়া রাখিবার জন্য কোনও ব্যবস্থা করা হয় না; সে আসে, যায়, থাকে, গৃহস্থালী করে;—কোনও বাধা দেওয়া হয় না, কিন্তু তাহার আসা যাওয়া, থাকা ও ঘরকন্না করা, আগাগোড়া ভাল করিয়া দেখিবার জন্য সমস্ত আয়োজন করা হইয়া থাকে। পাখী যে যে খাদ্য খাইতে ভালবাসে তাহা বাগানের এমন স্থানে এমন ভাবে রাখা হয় যে তাহা অদূরবর্ত্তী বাতায়ন হইতে সহজেই মানুষের চোখে পড়িতে পারে। দূরবীক্ষণযন্ত্র-সাহায্যে সমস্ত খুঁটিনাটি লক্ষ্য করিয়া প্রত্যহ বিহঙ্গ-জীবনের ইতিহাস লিখিলে অনেক রহস্যের সদুত্তর পাওয়া যায়। দূরদেশ হইতে পাখী আসিয়া ইচ্ছামত যাহাতে বাসা করিতে পারে, তজ্জন্য ঝোপের মধ্যে অথবা বৃক্ষশাখায় কৃত্রিম মানবরচিত নীড়াধার বিলম্বিত অথবা সংলগ্ন করিয়া রাখা হয়। কোন্ যাযাবর পাখী বৎসরের কোন্ ঋতুতে বাগানে আসে, কিরূপে কতদিন সেখানে জীবন যাপন করিয়া কবে সেখান হইতে চলিয়া যায়; পরবৎসরে আবার সেই ঋতুতে সেই সময়ে বাগানে সে ফিরিয়া আসে কি না; পুরাতন অভ্যস্ত নীড়াধারের মধ্যে আবার নূতন করিয়া গৃহস্থালী পাতে কি না এবং ঋতুপরিবর্ত্তনের সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় সে দেশান্তরিত হয় কি না;—পক্ষিজীবনের এই সমস্ত ছোট ছোট রহস্যময় ঘটনা এ ক্ষেত্রে এমন ভাবে দেখিবার যত সুযোগ হয়, তত আর কিছুতেই হয় না। প্রতিবৎসর এই সব বাগানে উড়িয়া আসিবার ও কিছুদিন অবস্থান করিবার অভ্যাস জন্মাইয়া গেলে কোনও কোনও যাযাবর পাখী হয় ’ত ঋতুপরিবর্ত্তনের সঙ্গে সঙ্গে আর তাহার পুরাতন বাসস্থানে প্রত্যাবর্ত্তন করে না, কালক্রমে তাহার যাযাবরত্ব অনেকটা কমিয়া যায় এবং স্বেচ্ছায় এই সব নূতন জায়গায় শাবক উৎপাদনে সে সঙ্কোচ বোধ করে না।
নব্যতন্ত্রদিগের এই বিহঙ্গাশ্রম ব্যাপারটি তুচ্ছ মনে করিলে তাহাদের সমস্ত উদ্যমের উপর অবিচার করা হইবে। বিশেষতঃ