পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১০
পাখীর কথা

আমি পূর্ব্বে বলিয়াছি যে, এখন জগতের মধ্যে সর্ব্বত্রই মানবজীবনকে নূতন করিয়া গড়িয়া তুলিবার জন্য প্রবল চেষ্টা হইতেছে। এ অবস্থায় মানবসহায় বিহঙ্গকে যে-উপায়ে ভাল করিয়া চিনিতে পারা যায় এবং আমাদের উপকারে লাগাইবার জন্য তাহাকে আপদ্ বিপদ্ হইতে রক্ষা করিতে পারা যায়, তাহা যত্ন সহকারে আলোচিত হওয়া উচিত। এই যে আশ্রমের কথা উঠিয়াছে, ইহা বিশেষভাবে মার্কিন দেশে সুন্দররূপে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। পাখীকে মুক্ত করিয়া দেওয়া হউক, বিহঙ্গজাতি সম্বন্ধে এই Declaration of Independence মার্কিন দেশেই শোভা পায়। মার্কিন দেশের ভূতপূর্ব্ব প্রেসিডেণ্ট্ মিঃ রুজ্‌ভেল্ট হিংস্র জন্তু শিকার করিতে ভালবাসিতেন; তাঁহার মৃত্যুর কিছুদিন পূর্ব্বেও তিনি আফ্রিকায় মৃগয়া করিতে গিয়াছিলেন। কিন্তু তিনি আজীবন পাখীর পরিচর্য্যা যে ভাবে করিয়াছিলেন এবং তাঁহার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করিয়া তাঁহার স্বদেশবাসী অনেক বালক ও প্রৌঢ় যেমন করিয়া পক্ষিরক্ষার চেষ্টা করিয়া আসিতেছে, তাহা ভাবিয়া দেখিলে অবাক্ হইতে হয়। মার্কিন দেশ ’ত য়ুরোপের মত এই মহাসমরে বিধ্বস্ত হয় নাই; তাহার Reconstruction সমস্যা উৎকটভাবে রাষ্ট্রনীতিজ্ঞের সমক্ষে উপস্থাপিত করা হয় নাই; কিন্তু তবুও তথায় স্বদেশের কল্যাণের জন্য পাখীর সেবায় মানুষকে রত থাকিতে দেখিয়া বিস্মিত হইবার কিছুই নাই। যে দেশ এই মহাসমরান্তে ক্ষুধিত মধ্য-য়ুরোপকে প্রায় শতকোটি মণ আহার্য্য সামগ্রী যোগাইয়াছে, তাহাকে উপযুক্ত পরিমাণে শস্যাদি উৎপন্ন করিবার জন্য সমস্ত প্রকৃষ্ট উপায় অবলম্বন করিতে হইয়াছে; এবং সেই শস্যাদিকে রক্ষা করিবার জন্য বিশেষভাবে যে পাখীর সাহায্য লইতে হইয়াছে তাহার সহিত নানা প্রকারে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ রাখিতে হইয়াছে। তাই দেখিতে পাইতেছি যে, রুজ্‌ভেল্টের মৃত্যুর পরে যখন তাঁহার স্মৃতিরক্ষার আয়োজন করিবার চেষ্টা হইল,