পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় ভাগ
১১৪

যে, সেই সফলতা অথবা ব্যর্থতার জন্য মানুষের চিন্তার ধারা অথবা পর্য্যবেক্ষণের রীতি রেখান্তরে বিন্যস্ত হইবে? এক কথায় ইহার সদুত্তর দেওয়া কঠিন; অবশ্যই গোঁড়ামীর পক্ষে আদৌ কঠিন নহে, কারণ তখন জোর করিয়া হাঁ অথবা না বলা যাইতে পারে। কিন্তু বাস্তবিক এখন পর্য্যন্ত সফলতা ও ব্যর্থতা সম্বন্ধে খোলসা ভাবে শুধু হাঁ কিম্বা না বলা চলিবে না। কে বলিবে যে, অতীতের সমস্ত চেষ্টার পরিপূর্ণ পরিণতি হইয়াছে অথবা সবটাই ব্যর্থতায় পর্য্যবসিত হইয়াছে? হয়’ত পক্ষী সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান অসম্পূর্ণ আছে, তাই বলিয়া তাহার যতটা পরিচয় আমরা পাইয়াছি তাহাতে aviculturistএর চেষ্টা ব্যর্থ হয় নাই—ইহা নিশ্চয়। তাহার অঙ্গপ্রত্যঙ্গের গঠন, তাহার বর্ণ, তাহার কণ্ঠস্বর, নীড়নির্ম্মাণে নিপুণতা অথবা অক্ষমতা, ঋতুবিশেষে পক্ষিদম্পতির গৃহস্থালী, বাসাটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখিবার চেষ্টা, আহার, নিদ্রা প্রভৃতি যত কিছু খুঁটিনাটি সমস্তই পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে দেখিবার সুযোগ খাঁচার ব্যবস্থা না থাকিলে কি পাওয়া যাইত? তাই অনেকের কাছে পাখীর জীবন-কাহিনীতে অনাবিষ্কৃত বিশেষ কোনও রহস্য নাই বলিয়া প্রতীয়মান হইতে পারে। তবে এই যে “আশ্রমের” কথা উঠিয়াছে, ইহার বিরুদ্ধে আমাদের বিশেষ কিছু বলিবার আবশ্যকতা নাই বটে, কিন্তু খাঁচায় পোষা পাখী সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা না থাকিলে বনের পাখীকে আবার বনে ছাড়িয়া দেওয়া হউক একথা উঠিতে পারিত না; অর্থাৎ তাহার সম্বন্ধে আবদ্ধাবস্থায় আমাদের সঞ্চিত জ্ঞান অভ্রান্ত সত্য কি না—তাহা পরীক্ষা করিতে হইলে তাহাকে মুক্তি দিয়া তাহার অবয়ব, বর্ণ-বৈচিত্র্য, কণ্ঠস্বর, নীড়রচনা, গৃহস্থালী প্রভৃতি বৈজ্ঞানিকভাবে দেখিবার চেষ্টা করা উচিত।

 বেশ কথা। ইহাতে আপত্তি করিবার কিছুই নাই। সুব্যবস্থা করিতে পারিলে ইহাতে সুফলের প্রত্যাশা করা যাইতে পারে। কিন্তু এতদিনকার aviculture এর কাছে শুধু এই নবীন সম্প্রদায় কেন,