পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
১৮৯

 Indian koel is found in the plains where its clear melodious voice is heard in hot balmy days in early spring.

 নবীন বসন্তে পিকবধূর গর্ভাধান কাল; তখন পিকদম্পতির কলকূজনের বিরাম থাকে না। কোকিলকূজিত কুঞ্জকুটীরের চারিদিকে কোমল মলয়সমীর বহিতে থাকে। জার্ডন বলিতেছেন—

 About the breeding Season the koel is very noisy, and may be then heard at all times, even during the night, frequently uttering its wellknown cry.

 এখন অবশ্যই বুঝিতে পারা যাইবে যে, যদিও কোকিল, হংসের মত, যাযাবর নহে, তবুও সে এমন ভাবে কিছুকালের জন্য প্রকৃতির চিত্রপট হইতে আপনাকে লুপ্ত করিয়া ফেলে যে, কবি কিম্বা অকবি, কেহই তাহার সন্ধান পান না। তাই ঋতুসংহারে গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ হেমন্ত শিশির—বর্ণনার মধ্যে এই Eudynamis honorata বা কোকিলকে খুঁজিয়া পাওয়া গেলনা।

 এইখানে বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষায় পিককে বিদায় করা যাক্।—“তুমি বসন্তের কোকিল, শীতবর্ষার কেহ নও।” যে বর্ষায় ময়ূরের আনন্দনৃত্য ও বলাকার উড্ডীনগতি পথিকের চিত্তহরণ করে, সেই বর্ষার আর একটি পাখীর তৃষাকুলধ্বনি অনবরত তাহার শ্রবণমূলে আঘাত করে। মেঘদূতপ্রসঙ্গে তাহার কথা ভাল করিয়া আলোচনা করিবার সুযোেগ পাইয়াছিলাম। সেই চাতকপাখীরচাতক মেঘের সহিত এত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দাঁড়াইয়া গিয়াছে যে, ঋতুসংহারের বর্ষাবর্ণনায় মহাকবি তাহাকে কিছুতেই বর্জ্জন করিতে পারিলেন না,—

তৃষাকুলৈশ্চাতকপক্ষিণাং কুলৈঃ
প্রযাচিতাস্তোয়ভরাবলম্বিনঃ।
প্রযান্তি মন্দং বহুধারবর্ষিণো
বলাহকাঃ শ্রোত্রমনোহরস্বনাঃ॥