পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
২১১

মৃগয়ার কঠোরতায় অতিশয় ক্লান্ত ও অবসন্ন হইয়া বিরক্তভাবে আপনা-আপনি বলিতেছে—“হা অদৃষ্ট! এই রাজার বয়স্য হয়ে আমি মারা গেলাম। একে ঐ মৃগ, ঐ বরাহ, ঐ শার্দ্দূল এই ভাবে দৌড়াদৌড়িতে হায়রান; খাদ্য পানীয় জোটে না, গায়ের ব্যথায় রাত্রে ঘুম হয় না; তাতে আবার প্রভাত হতে না হতেই শকুনিলুব্ধকগণের অরণ্যময় ভীষণ চীৎকারে জেগে উঠি।”

 তৃতীয় অঙ্কে প্রিয়ংবদা ও অনসূয়া, সখী শকুন্তলার মনোভাব রাজা দুষ্মন্তের নিকট জ্ঞাপনার্থ উপায় উদ্ভাবন করিতেছেন। প্রিয়ংবদা শকুন্তলাকে প্রণয়পত্র লিখিতে অনুরোধ করিয়া বলিলেন যে, তিনি ঐ পত্রকে পুষ্পে ঢাকিয়া দেবতাপ্রসাদচ্ছলে রাজার হাতে দিবেন। প্রত্যুত্তরে শকুন্তলা বলিলেন যে, তিনি কি লিখিবেন, তাহা স্থির করিয়াছেন; লেখার উপকরণ পাইলে লিখিতে পারেন। প্রিয়ংবদা বলিলেন—“এই শুকোদর সুকুমার নলিনীপত্রে আপনার নখ দ্বারা লিখিয়া ফেল।” পত্র লেখা হইল, কিন্তু প্রেরণের প্রয়োজন হইল না। বৃক্ষান্তরালে প্রচ্ছন্ন রাজা অতঃপর আত্মগোপন অনাবশ্যকবোধে দেখা দিলেন। শকুন্তল-দুষ্মন্তের পরস্পর প্রণয়লাপের আনুকূল্যার্থ সখীদ্বয় ছল করিয়া তথা হইতে প্রস্থান করিল। কিন্তু বিশ্রম্ভালাপের সুযোগ স্থায়ী হইল না। সহসা নেপথ্যধ্বনি শ্রত হইল—“চক্কবাকবহুএ আমন্তেহি সহঅরং। উবট্‌ঠিদা রঅণী।” চক্রবাকবধূ! আপনার সহচরকে আমন্ত্রণ কর, রাত্রি উপস্থিত।

 চতুর্থ অঙ্কে কুলপতি কণ্ব শকুন্তলার অনুরূপ বরলাভে প্রসন্ন হইয়া তাহাকে পতিগৃহে প্রেরণ করিতেছেন, এমন সময়ে শিষ্য শার্ঙ্গরব মুনিকে বলিলেন—ভগবন্! শকুন্তলার এই বনবাস-বন্ধু তরুসকল তাহার গমনে অনুমোদন করিতেছে, কারণ, পরভৃতকূজনছলে উহারা প্রত্যুত্তর দিতেছে—