পাখী-পোষা
আধুনিক যুগের য়ুরোপীয় পক্ষিপালকগণকে তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করিতে পারা যায়। প্রথম, যাঁহারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হইয়া উদ্যান-শোভন, জীবজন্তুপালন প্রভৃতি প্রীতিপ্রদপাশ্চাত্য পক্ষিপালক ব্যাপারে লিপ্ত থাকিয়া আপনাদিগের অবসরকাল সুখে অতিবাহিত করেন। কর্ম্মহীন সুদীর্ঘ অবসরে আপনাদিগকে নিযুক্ত রাখিবার বাসনাই অনেকস্থলে তাঁহাদিগের এই প্রকার সুখদ অনুষ্ঠানের মূল। দ্বিতীয়,—আর একশ্রেণীর লোক আছেন, যাঁহারা অর্থ বা যশোলিপ্সু হইয়া পক্ষিপালনে ব্রতী হ’ন। ইঁহাদিগের চিত্ততিনটি বিভিন্ন দল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের উপভোগ বা বিজ্ঞানচর্চ্চা দ্বারা তত আকৃষ্ট হয় না, যতটা নাম এবং ধনোপার্জ্জনের তীব্র বাসনা ইঁহাদিগকে বিচিত্র ক্রিয়াকাণ্ডে প্রবর্ত্তিত করে। য়ুরোপের বিভিন্ন স্থানে পাখীদিগের প্রদর্শনীর নিমিত্ত যে সমস্ত ব্যবস্থা আছে, ঐ প্রদর্শনী কর্ত্তৃক অর্পিত পদকাদির লোভে প্রণোদিত হইয়া ইঁহারা কৃত্রিম খাদ্যাদির সাহায্যে পাখীদিগের স্বাভাবিক বর্ণের বিকৃতি[১] ঘটাইতে উদ্যত হন, এবং নিজ নিজ
- ↑ পাশ্চাত্য পক্ষিপালকগণ যে সকল কৃত্রিম খাদ্যবস্তুর সাহায্যে পক্ষিগণের এই প্রকার অস্বাভাবিক বর্ণ-বৈচিত্র্য ঘটাইয়া থাকেন, তন্মধ্যে উদ্ভিজ্জ পদার্থই প্রধান উপকরণ। যে উপকরণগুলি একত্র মিশাইয়া খাদ্যের সহিত সেবন করাইলে কেনেরী (canary) পক্ষীর বর্ণান্তর সাধিত হয়, তাহাদের একটী তালিকা দিলাম—
গাঢ় পীতবর্ণ হরিদ্রাচূর্ণ
২ আউন্স গাঢ়গাঢ়প Annato seed২ আউন্স„ গাঢ়গাঢ়প Salad oil৬ আউন্স„ উল্লিখিত উপকরণসমূহের ভাগের তারতম্য অনুসারে কেনেরী পক্ষীর বর্ণের তারতম্য ঘটিতে দেখা যায়—যথা, কোন স্থানে গাঢ় পীতবর্ণের আধিক্য, কোথাও বা কমলালেবুর রং। এইরূপ বর্ণ-কৃত্রিমতা উৎপাদনের নিমিত্ত লঙ্কা এবং জাফরান (saffron) সময়ে সময়ে ব্যবহৃত হইয়া থাকে।