পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা
৪৯

কহিলেন ডাল, বলিয়া যাও, শুনিতেছি। শকুন্তলা কহিলেন সেই সময়ে আমার কৃতপুত্র দীর্ঘাপাঙ্গ নামে মুগোবক তথায় উপস্থিত হইল। তুমি উহাকে সেই জল পান করিতে আহবান করিলে। তুমি অপরিচিত বলিয়া সে তোমার নিকটে আনিল মা। পরে আমি হন্তে করিলে, সে আসিয়া অনায়াসে পান করিল। তখন তুমি পরিহাস করিয়া কহিলে সকলেই সজার্তীয়ে বিশ্বাস করিয়া থাকে। তোমা দুজনেই জঙ্গল, এ জন্য ও তোমার নিকটে আসিল।

 রাজা শুনিয়া ঈষৎ হাম করিয়া কহিলেন কামিনাদিগের এইরূপ মধুমাখা প্রবঞ্চনাবাক্য বিষয়াসক্ত ব্যক্তিদিগের বশীকরণ মন্ত্রস্বরূপ। গোতঙ্গী শুনিয়া কিঞ্চিৎ কোপ প্রদর্শন করিয়া কহিলেন মহাভাগ! এ জন্মাবধি তপোবনে প্রতিপালিত, প্রবরুনা কাকে বলে জানে না। রাজা কহিলেন তাপসন্ধে! প্রব#না স্ত্রীজাতির স্বভাবসিদ্ধ বিদ্য; শিখিতে হয় না। মানুষের কথা কি কহিব, পশু পক্ষীদিগেরও বিনা শিক্ষায় প্রবানৈপুণ্য দেখিতে পাওয়া যায়। দেখ, কেহ শিখাইয়া দেয় না, অথচ কোকিলারা, কেমন প্রবঞ্চনা করিয়া স্বীয় সন্তানদিগকে অন্য পক্ষী দ্বারা প্রতিপালিত করিয়া লয়। শকুন্তলা রুষ্ট হইয়া কহিলেন অনার্ষ! তুমি আপনি যেমন অন্যকেও সেইরূপ মনে কর। রাজা কহিলেন তাপসকনো! দুষ্যন্ত গোপনে কোন কর্ম্ম করে। যখন যাহা করিয়াছে সমুদায়ই সৰ্বত্র প্রসিন্ধ আছে। কই, কেহ বলুক দেখি, আমি তোমার পাণিগ্রহণ করিয়াছি। শকুন্তলা কহিলেন তুমি আমাকে স্বেচ্ছাচারিণী করিলে। পুরুবংশীয়েরা অতি উদারস্বভাব এই বিশ্বাস করিয়া, যখন আমি মধুমুখ পাহৃদয়ের হস্তে আত্মসমর্পণ করিয়াছি, তখন আমার ভাগ্যে