বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
শকুন্তলা

যে এই ঘটিবেক ইহা বিচিত্র নহে। এই বলিয়া অঞ্চল মুখে দিয়া রোদন করিতে লাগিলেন।

 তখন শার্ঙ্গরব কহিলেন না বুঝিয়া কর্ম্ম করিলে পরিশেষে এইরূপ মনস্তাপ পাইতে হয়। এই নিমিত্ত সকল কর্মই, বিশেযতঃ যাহা নিয়ে করা যায়, সবিশেষ পরীক্ষা না করিয়া করা কর্তব্য নহে। পরপরের মন না জানিয়া বন্ধ করিলে, সেই বন্ধুতা পরিশেষে শত্রুতাতে পর্যবসিত হয় শাঈরবের এই তিরক্ষার বাক্য শ্রবণ করিয়া রাজা কহিলেন, কেন আপনি স্ত্রীলোকের কথায় বিশ্বাস করিয়া আমার উপর অকারণে এরূপ দোষারোপ করিতেছেন? শাৱৰ কিঞ্চিৎ কোপাবিষ্ট হইয়া কহিলেন যে ব্যক্তি জন্মাবছিয়ে চাতুরী শিখে নাই তাহার কথা অপ্রমাণ, আর যাহাৱা পরতারণা বিদ্যা বলিয়া শিক্ষা করে তাহাদেৱ কথাই প্রমাণ হইবে! তখন রাজা শার্ঙ্গরবকে কহিলেন মহাশয়। আপনি বড় যথার্থবাদী। আমি স্বীকার করিলাম প্রতারণাই আমাদের বিদ্যা ও ব্যবসায়। কিন্তু আপনাকে জিজ্ঞাসা করি, ইহাকে প্রতারণা করিয়া আমার কি লাভ হইবে? শারব কোপে কম্পিতকলেবর হইয়া কহিলেন ‘নিপাত'। রাজা কহিলেন পুরুবংশীয়েরা নিপাত লাভ করে এ কথা অশ্রদ্ধেয়।

 এইরূপে উভয়ের বিবাদার দেখিয়া, শরত কহিলেন শার্ঙ্গরব! আর উত্তরোত্তর বাছুলে প্রয়োজন কি? আমরা গুরুর নিয়োগ অনুষ্ঠান করিয়াছি; এক্ষণে ফিরিয়া যাই চল। এই বলিয়া রাজাকে কহিলেন মহারাজ! ইনি তোমার পত্নী, ইচ্ছা হয় গ্রহণ কর, ইচ্ছা হয় ত্যাগ কর; পত্নীর উপর পরিণেতার সর্ব্বতোমুখী প্রভুতা আছে। এই বলিয়া শার্ঙ্গরব, শারদ্বত ও গোতমী তিন জনে প্রস্থাননোন্মুখ হইলেন।

 শকুন্তলা, সকলকে প্রস্থান করিতে দেখিয়া, অশ্রুপূর্ণ