পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 . পাতঞ্জল দর্শন । পা ১ । সূ ৪ । ] “দর্শিতবিষয়ত্বাং” এই ভাষাটুকু স্থত্রের পূরণ, অর্থাৎ ইহার সহিত মিলন করিয়া “দর্শিতবিষয়ত্বাৎ বৃত্তি-সারূপামিতরত্র” এইরূপ স্বত্র বুঝিতে হইবে। দৰ্শিতাঃ উপনীতাঃ, বিষয়াঃ শব্দাদয়ে ভোগ্যাঃ, যস্মৈ অসে দর্শিতবিষয়ঃ, তস্ত ভাবঃ দর্শিতবিষয়ত্বং, তস্মাৎ । অর্থাৎ চিত্ত বিষয়রপে পরিণত হইয়া পুরুষকে বিষয় প্রদর্শন করে, বিষয়বিশিষ্ট চিত্ত পুরুষে প্রতিবিম্বিত হয় এই নিমিত্ত পুরুষকে দর্শিত বিষয় বলা যায়। বুখানকালে যেরূপ চিত্তবৃত্তি হয় পুরুষেও যেন, ঐরূপ বৃত্তি (আমি মৃগী, আমি দেখিতেছি ইত্যাদি ) হইয়াছে বলিয়া বোধ হয়। এ বিষয়ে স্বত্র ( পঞ্চশিখৰ্কত) আছে, “একমেব দর্শনং, খ্যাতিরেব দর্শনম্” একমেব দর্শনম্। ইহারই অর্থ খ্যাতিরেব দর্শনম, অর্থাং বুখানকালে চিত্ত ও পুরুষ উভয়ের একরূপ দর্শন, (খ্যাতি, জন্য জ্ঞান ) প্রকাশ হইয়া থাকে। অয়স্কান্তমণি (চুম্বকপাথর) যেরূপ লৌহের নিকটে থাকিয়া উহাকে আকর্ষণ করে, লৌহের সহিত সংযোগ না হইলেও হয়, তদ্রুপ চিত্ত পুরুষের নিকটে থাকিয়াই উহার উপকারক হয়, পুরুষকে সমস্ত বিষয় প্রদর্শন করায়। এইরূপে চিত্ত পুরুষের দৃশু ( অনুভাব্য, ভোগ্য ) হইয়া “স্ব” অর্থাৎ স্বকীয় (আত্মীয় ) হয়। অজ্ঞানবশতঃ এইরূপ চিত্তবৃত্তি বোধ পুরুষে হইয়া থাকে, ইহার কারণ চিত্তের সহিত পুরুষের অনাদি সম্বন্ধ অর্থাৎ ভোক্তভোগ্যভাব, পুরুষ ভোক্ত (দ্রষ্টা), চিত্ত ভোগ্য ( দৃপ্ত )। বৃত্তিবিশিষ্ট চিত্তই পুরুষের বিষয় ॥ ৪ ॥ মন্তব্য। অধ্যাত্মশাস্ত্রের মধ্যে “বৃত্তি-সারূপামিতরত্র” এই অংশ অতিশয় দুৰ্ব্বোধ। পুরুষের স্বকীয় কোনও ধৰ্ম্ম (মুখ, দুঃখ, জ্ঞান ইত্যাদি ) নাই, সমস্তই চিত্তের ধৰ্ম্ম, অজ্ঞানবশতঃ পুরুষের বলিয়া বোধ হয় বলিয়াই আমি সুখী, আমি দুঃখী ইত্যাদি রূপে পুরুষ আবদ্ধ হয়, ইহার মৰ্ম্ম অবধারণ করা বড়ই দুষ্কর। জগতে আমি ভিন্ন (কর্তৃভিন্ন) অপর সমস্ত পদার্থই বিচারের বিষয় হইতে পারে, আমাকে আমি বিচার করা কিরূপে হইতে পারে ? বিচারুকর্তা আমি ভিন্ন আর কে ? আমার সুখ-দুঃখাদি আছে কি না ? আমার স্বরূপ কি ? ইত্যাদি বিষয় যতই আলোচনা করা যায় ততই যেন চিত্ত'-তরঙ্গ উদ্বেল হইয়া পড়ে। এই জন্যই শাস্ত্র বলিয়াছেন “নৈষা তর্কেণ ।