পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২ . পাতঞ্জল দর্শন। পা ১ । সূ২৭ ] ওঙ্কারের বাচ্য ঈশ্বর। প্রণব বাচক, ঈশ্বর বাচ্য, এই বাচ্যবাচকতারূপ সম্বন্ধ কি সঙ্কেত ( এই শব্দ দ্বারা এই অর্থের বোধ হউক, এইরূপ ঈশ্বরের ইচ্ছা ) দ্বারা উৎপন্ন হয়, না প্রদীপ প্রকাশের দ্যায় স্বতঃই অবস্থিত থাকে ? এইরূপ জিজ্ঞাসায় বলা হইতেছে পদের সহিত অর্থের সম্বন্ধ স্বতঃসিদ্ধঃ, সঙ্কেত দ্বারা উহার অভিব্যক্তি হয় মাত্র, যেমন পিতা ও পুত্রের সম্বন্ধ বর্তমানই থাকিয় “এই ব্যক্তি ইহার পিতা,” এ “উহার পুপ্র” এইরূপ সঙ্কেত দ্বারা প্রকাশিত হয় মাত্র। অন্তান্ত স্থষ্টিতেও এইরূপ শব্দ ও অর্থের বাচ্যবাচকতা সম্বন্ধ অপেক্ষা করিয়াই সঙ্কেত করা হইয়া থাকে, অর্থাৎ যে শব্দ দ্বারা যে অর্থের বোধ চিরকালই হইয়া থাকে, সঙ্কেত দ্বারা তাহাই প্রকাশিত হয়। শব্দজন্য অর্থের জ্ঞান নিয়তই হইয়া থাকে বলিয়া ঐ উভয়ের সম্বন্ধ ও নিত্য ইহা শাস্ত্রকারগণ স্বীকার করিয়া থাকেন || ২৭ ॥ মন্তব্য। সঙ্কেত দ্বিবিধ, ঈশ্বর সঙ্কেত ও আধুনিক সঙ্কেত, ঘটপটাদি স্থলে । ঈশ্বর সঙ্কেত, দেবদত্ত প্রভৃতি স্থলে আধুনিক সঙ্কেত, ইহাকেই অপভ্রংশ শব্দ বলে। “অস্মাৎ শব্দাৎ অয়মর্থে বোদ্ধব্যঃ,” “এতৎপদং এতদৰ্থবাচকং ভবতু” এইরূপ ঈশ্বরের ইচ্ছা অথবা ইচ্ছার বিষয়তাকে নৈয়ায়িকগণ সঙ্কেত বা শক্তি বলেন। মীমাংসকমতে শক্তি নিত্য। নৈয়ায়িকগণ বলেন সঙ্কেত দ্বারাই বাচ্যবাচকতা সম্বন্ধ উৎপন্ন হয়, তাদৃশ সম্বন্ধকে সঙ্কেত কৃত না বলিয়া “নিত্য, সঙ্কেত দ্বারা কেবল ব্যঙ্গ্য” এইরূপ বলিলে যে স্থানে উক্ত সম্বন্ধ থাকেনা সেখানে উহার অভিব্যক্তিও হইতে পারে না, অভিব্যঙ্গ্য ঘটপটাদি না থাকিলে শতসহস্র প্রদীপও তাহার অভিব্যক্তি করিতে পারে না। মহা প্রলয়ে শব্দ ও অর্থ উভয়ই বিনষ্ট হয়, সুতরাং স্বষ্টির প্রারম্ভে সঙ্কেত দ্বারাই তাদৃশ সম্বন্ধ উৎপন্ন হয়, এইরূপই স্বীকার করা কর্তব্য। পতঞ্জলির মতে সকল শব্দই সকল শব্দের বাচক, ঈশ্বর সঙ্কেত দ্বারা কেবল উহার প্রকাশ হয়, অর্থাৎ অর্থবিশেষে নিয়মিত হয় মাত্র । মহাপ্রলয়ে শব্দরাশির বিগম হইলেও স্বষ্টির প্রারম্ভে পুনৰ্ব্বার প্রাচুর্ভাবকালে তাদৃশ শক্তিবিশিষ্ট হইয়াই প্রাদুর্ভূত হয়, অতএব পূৰ্ব্বোক্ত নৈয়ারিকের । আশঙ্কার কোনও কারণ নাই ॥ ২৭ { ভাষ্য। বিজ্ঞাতবাচ্যবাচকত্বস্য যোগিন: |