পাতা:পারসীক গল্প - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
পারসীক গল্প।

 কাজি সাহেবের কথা শুনিয়া, ফতেমা কহিল “ধর্ম্মাবতারের বিচারে কথা কহিবার ক্ষমতা কাহার আছে? আপনি যাহা আড্ডা করিবেন, তাহাই আমাদিগের শিরোধার্য্য।”

 সেই সময় নছিবন অশ্রুপূর্ণলোচনে করযোড়ে দণ্ডায়মানা হইয়া কহিল, “ধর্ম্মাবতার! আমার একটী কথা বলিবার আছে। আপনি আপনার জল্লাদকে ওই পুত্র-হত্যা করিতে নিষেধ করুন। আমি বুঝিতে না পারিয়া আপনার কাছে মিথ্যা কথা কহিয়াছি। এ পুত্র আমার নহে, উহা ফতেমার। অতএব, পুত্রের প্রাণবধ না করিয়া আপনি ফতেমাকে ঐ পুত্র প্রদান করুন।”

 নছিবনের এই কথা শুনিয়া, কাজি সাহেব তখন বুঝিতে পারিলেন, এ পুত্র কাহার গর্ভজাত, ও এই পুত্রশোকে কাহার হৃদয় দগ্ধ করিবে। তিনি তৎক্ষণাৎ জল্লাদের নিকট হইতে উক্ত পুত্রটীকে আনাইয়া নছিবনের হস্তে প্রদান করিলেন ও কহিলেন, “আমি এখন বেশ বুঝিতে পারিয়াছি, ফতেমা মিথ্যা কথা কহিতেছে। এ পুত্র তাহার নহে, তোমার। তুমি তোমার শিশু সন্তানকে লইয়া প্রস্থান করিতে পার। আর আমার নিকট মিথ্যা কথা কহিবার নিমিত্ত ফাতেমা কিয়দ্দিবসের নিমিত্ত কারাবদ্ধা থাকিবে। কিন্তু এখনও যদি সে আমার নিকট সত্য কথা কহে, তাহা হইলে আমি তাহাকে অব্যাহতি প্রদান করিব; নচেৎ কিয়দ্দিবসের জন্য জেলের মধ্যে তাহার স্থান করিয়া দিব।”

 কাজি সাহেবের এই কথা শুনিবামাত্র ফতেমা কাঁদিয়া ফেলিল, ও কহিল “দোহাই ধর্ম্মাবতার! আমাকে আর দণ্ড