পাতা:পারসীক গল্প - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিচার-সঙ্কক্ট।

কাহার, তখন আমি প্রকৃত বিচার করিয়া তোমাদিগের বিবাদ ভঞ্জন করিয়া দিতেছি।

 এই বলিয়া কাজি সাহেব তাঁহার জল্লাদকে সেই স্থানে ডাকাইলেন। সংবাদ পাইবামাত্র জল্লাদ যোড় আসিয়া কাজি সাহেবের সম্মুখে দণ্ডায়মান হইল। জল্লাদকে দেখিয়া কাজি সাহেব তাহাকে কহিলেন, “এই বালকটা লইয়। এই স্ত্রীলোক-দ্বয়ের মধ্যে ভয়ানক বিবাদ উপস্থিত হইয়াছে। উভয়েই এই পুত্রকে আপনাপন গর্ভজাত পুত্র বলিয়া আমার সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। কিন্তু সাক্ষ্যাদির দ্বারা কোন রূপে প্রমাণ করিতে পারিতেছে না যে, এই পুত্র কাহার গর্ভজাত। অথচ উভয়েই স্বীকার করিতেছে যে, এই পুত্র ইহাদিগের স্বামী উজীরের ঔরসজাত। এরূপ অবস্থায় আমার বিচারে উজীরের উভয় পত্নীই তাঁহার একমাত্র পুত্রের সমান অংশীদার। তুমি এই পুত্রের দুই পা দুইদিকে ধরিয়া চিরিয়া সাবধানে ঠিক তুল্যাংশে উহাকে দুই ভাগে বিভক্ত কর। এক এক অংশ উভয় অংশীদারের এক একজনকে প্রদান কর।”

 “হুজুরের আড্ডা শিরোধার্য্য,” এই কথা বলিয়া জল্লাদ সেই পুত্রকে আপন স্কন্ধে উঠাইয়া লইয়া, বধ্যভূমি অভিমুখে প্রস্থান করিল।

 সেই সময় কাজি সাহেব পুনরায় ফতেমাকে সম্বোধন করিয়া করিলেন, “কেমন ফতেমা! আমি এখন কেমন বিচার করিয়া দিলাম! এখন হুইতে তোমাদিগের সমস্ত বিবাদ মিটিয়া যাইবে।”