পাতা:পারসীক গল্প - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বৃক্ষের সাক্ষ্য।
২৭

আপনার গচ্ছিত টাকা প্রদান করিতেছি না, এরূপ মিথ্যা কথা রটনা করিয়া আমার নামে জনসমাজে বদনাম করিবেন না।”

 বৃদ্ধের কথায় যুবক একবারে হতবুদ্ধি হইয়া পড়িলেন, ও তাহার ব্যবহার দেখিয়া মনে মনে তাহাকে সহস্র গালি প্রদান করিতে করিতে কাজির নিকট গিয়া উপস্থিত হইলেন। কাজি সাহেব যুবকের মুখে সমস্ত বৃত্তান্ত অবগত হইলেন। আরও জানিতে পারিলেন,—তিনি যে বৃদ্ধের নিকট মোহর গচ্ছিত করিয়া রাখিয়াছেন, তাহার কোনরূপ প্রমাণ করিবার ক্ষমতা সেই যুবকের নাই। তথাপি তিনি বৃদ্ধকে ডাকাইয়া আনিলেন, এবং যুবকের সম্মুখে তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি এই ব্যক্তির গচ্ছিত অর্থ প্রত্যর্পণ করিতেছ না কেন?”

 উত্তরে বৃদ্ধ কহিল, “দোহাই হুজুর! এ ব্যক্তি মিথ্যা কথা কহিতেছে। কখনও এ আমার নিকট একটামাত্র পয়সাও জমা রাখে নাই।”

 কাজি। (যুবক-প্রতি) তুমি যে বৃদ্ধের নিকট টাকা জমা রাখিয়াছিলে বলিতেছ, তাহার প্রমাণ কি? জমা রাখিবার সময় সেই স্থানে কোন ব্যক্তি উপস্থিত ছিল?

 যুবক। এই বৃদ্ধই আমার প্রমাণ। বৃদ্ধই শপথ করিয়া বলুন যে, আমি উহার নিকট অর্থ গচ্ছিত করিয়া রাখিয়াছি, কি না। এই বৃদ্ধ ব্যতীত আমার আর কোন প্রমাণ নাই। যে সময় আমি ইহাকে অর্থ প্রদান করি, সেই সময় সেই স্থানে অপর কোন লোক উপস্থিত ছিল না।