পাতা:পারসীক গল্প - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
পারসীক গল্প।

প্রদান করিয়া সে চলিয়া গিয়াছে। সে আমাকে বলিয়া গিয়াছে, তোমার কথা প্রকৃত; তুমি বৃদ্ধের নিকট প্রকৃতই অর্থ গচ্ছিত করিয়া রাখিয়া দিয়াছ।

 বৃদ্ধ। দোহাই ধর্মাবতার! আমি এখানে আসিয়া পর্য্যন্ত এই স্থানেই বসিয়া আছি। বৃক্ষ এই স্থানে ত আইসে নাই, বা কোনরূপ সাক্ষ্যও প্রদান করে নাই। যদি বৃক্ষ এই স্থানে আগমন করিত, তাহা হইলে আমি অত বড় বৃক্ষটীকে আর দেখিতে পাইতাম না?

 কাজি। বৃদ্ধ! তুমি যাহা বলিতেছ, তাহা প্রকৃত। বৃক্ষ এই স্থানে আগমন করে নাই। কিন্তু তুমি মনে করিয়া দেখ দেখি, ইতিপূর্ব্বে যখন আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম “এতক্ষণ যুবক সেই বৃক্ষের নিকট উপস্থিত হইতে পারিয়াছে কি?” তখন তুমি অবলীলাক্রমে উত্তর করিয়াছিলে, বা প্রকৃত কথা হঠাৎ তোমার মুখ দিয়া বাহির হইয়া পড়িয়াছিল যে, “না মহাশয়! এখন পর্য্যন্ত সে সেই বৃক্ষের নিকট উপস্থিত হইতে পারে নাই।” তোমার কথাতেই বেশ বুঝিতে পারা যাইতেছে যে, যে বৃক্ষের নিয়ে বসিয়া অর্থ দেওয়া হইয়াছিল, সেই বৃক্ষ কোথায়, তাহা তুমি বেশ অবগত আছ। আর যখন তাহা জান, তখন এ অর্থও যে তুমি গ্রহণ করিয়াছ, তদ্বিষয়ে আর কিছুমাত্র সন্দেহ নাই। সেই বৃক্ষ কোথায়, তাহা যদি তুমি না জানিতে, বা সেই অর্থ যদি তুমি গ্রহণ না করিতে, তাহা হইলে আমার কথার উত্তরে তুমি নিশ্চয় বলিতে যে, কোন্ বৃক্ষ, তাহা আমি বলিতে পারি না। এখন আমার বেশ প্রতীতি হইতেছে