পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খোেডা যুদ্ধতী মেয়ে। বাপের এত টাকা । এরই প্ৰতিক্রিয়ায় কি হয়ে যেতে পারত। সে হিসাব কি আর অঘোর করে না, এত বড় সে হিসাবী মানুষ ! মেয়েকে নিয়ে হয় তো নাকের জলে চোখের জলে একোকার হতে হত তার। হয়ত সুনীলের জন্যই তার ব্যর্থতার প্রতিক্রিয়া গ্ৰাস করা দূরে থাক, বিভার চরিত্রটি হয়েছে শক্ত, নিজের মনকে সে বশে রাখতে পারে। কিন্তু কদিন ধরে নতুন করে আবার মেঘ ঘনিয়েছে অঘারের মুখে। বিভার জন্যই মেঘের সঞ্চার সেটা অনুমান করা যায়, কারণ মেয়ের জন্য ছাড়া অন্য কোন কারণে তব মুখে এরকম মে: সঞ্চারিত হয় না । মেজাজ বিগড়ে গেলে আঘোর আপিসে কর্মচারিদের সঙ্গে সাধারণত খুব ভাল ব্যবহার করে। ব্যতিক্রমও অবশ্য ঘটে থাকে। কিন্তু এটাই তার সাধারণ নিয়ম। সে জানে, রাগ দিয়ে কোন কাজ হয় না। সংসারে। রাগ বরং কাজ নষ্টই করে দেয়, লোকসান ঘটায় । অন্য সময় তো টনটনেই থাকে সাধারণ বিচার বুদ্ধি, রাগের সময়টাই বরং সাবধান থাকা বিশেষভাবে দরকার । রোজ একটা দুটো জরুরী কাজ সুনীলের থাকেই। হয় সে কাজ অন্য কেউ করতে পারবে না অথবা অন্যকে দিয়ে করাতে অধোরের বিশ্বাস বা সাহস হবে না । কাজ বুঝিয়ে দিয়ে অঘোর বলে, তোমার হাতে উন্নতি হচ্ছে কাগজটার। কিন্তু এত খাটুনি কি পেরে উঠবে ? অঘোরকে বলে’ সুনীল নন্দার কাগজের জন্য একটা স্থায়ী বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করেছে। সেই সুত্রে অঘোর নিয়মিত কাগজ পায় । কাগজে খাটুনি বিশেষ নেই। ঘরেও লেখাপড়ার কাজ করি, ওখানেও সেই একই কাজ। এ আনন্দের কাজে কষ্ট হয় না। Se