পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিতেই হবে-আমার রসদ ফুরিয়ে এসেছে। নিখিলবাবু নানাভাবে শুষতেন, এখন বুঝতে পারছি। সুনীল নীরবে ভাবে । নন্দ বলে, আমি নিঃস্বার্থভাবে আপনার উপকার করছি ভাববেন না । কাগজের ভাগীদার হলে কাগজ থেকে লাভ করতে পারলে নেবেন, নইলে নেবেন না, আপনার সম্পর্কে আমার কোন দায় থাকবে না। লাভ দিয়ে হোক লোকসান দিয়ে হোক, নিজের কাগজ আপনি নিজে চালিয়ে যাবেন। সুনীল চিন্তিতভাবে বলে, হিসেবটা করেছ বুদ্ধিমতীর মতই। এখন মাইনে বলে। তবু কিছু নিচ্ছি, সেটা সন্ধ করতে চাও । এ কাগজ থেকে লাভ হতে দেরী আছে । নন্দ হাসি মুখে বলে, এত খেটে, এত সমগ্ন দিয়ে, সামান্য যা আপনি নিচ্ছেন, সেটা না পেলে আপনার চলবে কেন ? ভাগীদার করে আপনাকে হাত খরচের টাকা কটা থেকে বঞ্চিত করব, আমি মোটেই, সেটা হিসাবে ধরি নি। নিজে দোকান দিলে, লোকে আয় থেকে নিজের খরচের টাকাও নেয়। না নিলে চলবে কেন ? যে নামেই নিন-এত সময় দিয়ে খাটলে খুঁটলে, কিছু টাকা আপনাকে নিতেই হবে। সুনীল ভেবে বলে, তোমার বাবা ? প্ৰদ্যোতবাবু ? ওরা কি বলবেন ? বুঝলে কিছুই বলবেন না, খুন্সীই হবেন। না বুঝলে যা খুন্সী হয় বলবেন! এতদিনে কাগজটা তুলবাের একটা সুযোগ পেয়েছি, বাপ-দাদার খাতিরে সে সুযোগটা নষ্ট করব নাকি ? আগেও একবার একজন পাটনার জোটাবার কথা হয়েছিল, পয়সাওয়ালা পার্টনার। -সুবিধামত লোক না পাওয়ায় হয় নি। ঠিক লোকটিকে পেয়ে গেছি, আমি ছাড়ছি না কিছুতেই। আচ্ছা, একদিন দু’জনে বসা যাবে। খরচ আরও বাড়বে মনে হচ্ছে। প্রেসটার পিছনে কিছু পয়সা ঢালা দরকার। সেইজন্যই তো তাগিদ দিচ্ছি-ভাগ নিন। নিয়ে যা দরকার টরকার সব ব্যবস্থা করুন । SS 8