পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বা সম্ভব হয় না। রাজনীতি নিয়ে মাথা না ঘামালেও রাজনীতি বাদ দিয়ে আপনার চলতেই পারে না, আপনার জীবনে রাজনীতি এটে থাকবেই। আপনি একটা কাগজের মালিক। কিন্তু ধরে নেওয়া যাক আপনি কাগজ পৰ্য্যন্ত পড়েন না। কিন্তু শোনেন তো চালের দর কোথায় উঠেছে ? লোকে না খেয়ে মরছে ? উদ্বাস্তুর কিরকম কষ্ট পাচ্ছে ? কত মানুষ বেকার বসে আছে ? সব কিছু কালোবাজারের গ্রাসে গেছে ? দেশের লোকের সভায়, শোভাযাত্রায়, লাঠি গুলি চলছে? শুনে নিশ্চয় গা জ্বালা করে আপনার। তার মানেই পক্ষ নিলেন । গা জালা করলেই পক্ষ নেওয়া হল ? হল বৈকি। আপনার ঠেকছে কোথায় জানেন ? দলের পক্ষ নেওয়া মানে আপনি ধরে রেখেছেন আন্দোলন করা, সোজাসুজি আন্দোলনে যোগ দেওয়া । কোন দল সাধারণ লোকের জন্য ন্যায্য দাবী তুললে, ঘরের কোনে বসে মনে মনে সায় দিলেও আপনি পক্ষ নিলেন। মনে মনে সায় দেওয়াটা কাজে প্ৰকাশ পাবেযত সামান্য হোক তুচ্ছ হােক কাজটা। ঘরের কোনায় থেকে নিজের ভাইবােনকে কথায় কথায় মনের কথাটা জুনালেন-তার মানে দাঁড়াল কি ? ওই দলের হয়ে আপনি প্রচার করলেন। সুনীল ঘড়ির দিকে তাকায় । তারপর তাকায় নন্দার মুখের দিকে। বলে, আজ ইংরাজী পড়া থাক, যা বলছি সেটাই পড়াই। বেশ একটু ধাধা। লাগিয়ে দিয়েছি মনে হচ্ছে, কথাটা স্পষ্ট করা উচিত। পক্ষ যে মানুষেকে নিতেই হবে তার আসল মানে হল এই যে, সমস্ত মানুষ দুটো ভাগে ভাগ হয়ে আছেশোষক আর শোষিত। এর একটা ভাগে মানুষকে পড়তেই হবে। রাজনৈতিক দলও আসলে আছে দুটোই-শোষকের দল আর শোষিতের দল। কিন্তু দল তো অনেকগুলি । দুটো ছাড়া বাকী সব উপদল, সুবিধাবাদী দল। যতই বড় বড় বুলি কপচাক আর নিজেদের স্বাতন্ত্র্য দেখাবার চেষ্টা করুক, হয় এপক্ষ, নয়। ওপক্ষের স্বার্থে NV2