করিয়াছিলেন। তাহার পর ত্রিংশদ্বর্ষকাল অতীত হইয়াছে এখন সিংহদত্ত তক্ষশিলা সঙ্ঘারামের অধ্যক্ষপদ প্রাপ্ত হইয়াছেন। কিন্তু আমি যখন তীর্থপর্য্যটনে টক্কদেশে গিয়াছিলাম, তখন সিংহদত্ত শিশু; তিনি পৌরবজাতির অগ্রণী তক্ষদত্তের একমাত্র পুত্ত্র। কুমারপাদ সিংহদত্তের বয়ঃক্রম এখন ষষ্টি বর্ষের অধিক হইবে। সঙ্ঘে আশ্রয় লাভ করিয়া তাঁহার গৌরব বৃদ্ধি হইয়াছে, তিনি যবন রক্তে শতদ্রুতীর হইতে সিন্ধুনদ পর্য্যন্ত প্লাবিত করেন নাই বটে, তিনি পৌরবজাতির সহস্র সহস্র বর্ষব্যাপী অধিকারচ্যুত হইয়াছেন বটে; কিন্তু সমগ্র পঞ্চনদ আজ তাহার যশঃসৌরভে পরিপূর্ণ। সৃষ্টিকর্ত্তা তাহাকে অন্যবিধ বিজয়গৌরবের জন্য সৃষ্টি করিয়াছিলেন, আসুরিক বলে যবনের নিকট পরাজিত হইয়া তিনি মানসিক বলে সমগ্র যবনজাতিকে পদানত রাখিয়াছেন। যাহারা সাকেত ও মাধ্যমিক পর্য্যন্ত লুণ্ঠন করিয়া গিয়াছে, তাহারা অবশেষে তক্ষশিলার সিংহদত্তের পদপ্রান্তে লুণ্ঠিত হইয়াছে। কপিশা হইতে গান্ধার পর্য্যন্ত, গান্ধার হইতে শতদ্রুতীর পর্য্যন্ত এই তরুণ মহাস্থবিরের মানসিক বলে বিজিত হইয়াছে। আজ সদ্ধর্ম্মের উন্নতির অঙ্কুর মাত্র দেখা দিয়াছে, আমি শতাধিক বর্ষকালব্যাপী ঘটনাসমূহ লক্ষ্য করিতেছি। অধিকতর উন্নতির সময় অদূরবর্ত্তী। মৌর্য্য সাম্রাজ্যের সূচনায় আর্য্যাবর্ত্তের পশ্চিমপ্রান্তে যে মেঘ দৃষ্ট হইয়াছিল, মৌর্য্যরাজ্যের অবসানে, সেই মেঘোৎসৃষ্ট প্লাবনে মুমূর্ষু সঙ্ঘে পুনরায় বলসঞ্চার হইয়াছে, পুনরায় পশ্চিম প্রান্তে মেঘ দেখা দিয়াছে, কুরুবর্ষে আর্য্যজাতির ও বাহ্লীকে যবনজাতির অধিকার লুপ্ত হইয়াছে, উত্তরমরু হইতে সমুদ্র তরঙ্গের ন্যায় শকজাতি আর্য্যাবর্ত্তের উত্তরখণ্ড আচ্ছন্ন করিয়াছে। ক্ষণেকের জন্য মহানদী শকপ্লাবন রুদ্ধ করিয়াছে। বাধা প্রাপ্ত হইয়া স্রোতের শক্তি
৬১