পাতা:পাষাণের কথা.djvu/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাষাণের কথা

দিন দিন বৃদ্ধি পাইতেছে, যেদিন এ স্রোতোবেগ বন্ধনমুক্ত হইবে, সেই দিন ইহা অবাধ গতিতে আর্য্যাবর্ত্তের অধিকাংশ স্থান প্লাবিত করিয়া ফেলিবে। বন্যার গতি যবনপ্লাবনের ন্যায় শতদ্রুতীরে রুদ্ধ থাকিবে না, ইহার বেগ প্রবলতর; প্রাচীন আর্য্য সভ্যতা প্লাবনে ভাসিয়া যাইলেও যাইতে পারে; যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে, তাহা হইলে মহদুপকার সাধিত হইতে হইবে। কারণ, মরুবাসী জাতিসকল যখন প্রাচীন আবাসভূমি পরিত্যাগ করিয়া নূতন দেশে উপনিবেশ স্থাপন করে, তখন তদ্দেশের আদিম অধিবাসিগণ যদি একেবারে অভিভূত না হইয়া থাকে, তাহা হইলে তাহারা শীঘ্রই পুনরায় আধিপত্যের কিয়দংশ লাভ করিতে সমর্থ হয়। মরুবাসী বর্ব্বরগণ সত্বরই নূতন দেশের প্রাচীন সভ্যতার নিকট নতশীর্ষ হইয়া থাকে। যদি সদ্ধর্ম্মের অঙ্কুরমাত্রও পঞ্চ নদে বিদ্যমান থাকে, তাহা হইলে কালে সমগ্র শকজাতি ত্রিরত্নের আশ্রয় গ্রহণ করিবে। আমি অতি বৃদ্ধ হইয়াছি, মানব জীবনের পরিমাণ অতিক্রম করিয়াছি, আমার দৃষ্টি শক্তি ক্ষীণ; কিন্তু আমি অনুভব করিতে পারিতেছি, যে সদ্ধর্ম্মে উন্নতির দিন আসিতেছে। সে দিন সুদূর নহে, সদ্ধর্ম্মের নবীনগৌরব মৌর্য্যাধিকারকালে লুপ্তপ্রায় গৌরবাপেক্ষা উজ্জ্বলতর হইবে। আমার জীবনের কার্য্য সমাপ্ত হইয়াছে, আমার জন্ম অদ্যাপি শেষ হয় নাই, সুতরাং আমাকে জন্মান্তর গ্রহণ করিতে হইবে, আমার দেহ পরিবর্ত্তনের সময় আসন্নপ্রায়। কিন্তু যাহারা থাকিবে তাহার দেখিবে,—সদ্ধর্ম্মের পুনরুত্থান কাল সমাগত প্রায়। ব্রহ্মন্য ধর্ম্ম ও সদ্ধর্ম্মের ঘাত প্রতিঘাতে আর্য্যাবর্ত্তবাসিগণ হীনবল হইয়া পড়িয়াছে, আর্য্যাবর্ত্তে এমন বল নাই যে, তৎকর্ত্তৃক শকজাতির আক্রমনের দুর্দ্দমনীয় বেগ প্রতিরুদ্ধ হয়। শিক্ষার ও দূরদর্শিতার অভাবে

৬২