পাতা:পাষাণের কথা.djvu/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাষাণের কথা

হইতে সিংহদত্ত আসিয়াছিলেন। সিংহদত্ত ও মহাস্থবিরের কথা মনে পড়িয়াগেল। তক্ষশিলার মহাবিহারের তখন কি অবস্থা জানিবার জন্য ব্যাকুল হইলাম। আমার ভাষা বুঝিবার শক্তি থাকিলে তাহারা নিশ্চয়ই উত্তর দিত, কারণ আমি এখন যে ভাবে কথা বলিতেছি চিরকালই সে ভাবে বলিয়া আসিয়াছি, আমার কথা কখনও ইহা অপেক্ষা স্পষ্টতর হয় নাই।

 শুনিলাম স্তূপের ও বেষ্টনীর সংস্কার হইবে, তীর্থযাত্রিগণের সুবিধার জন্য মহাবনের মধ্যে পথ প্রস্তুত হইবে, সেই পথে রাজাধিরাজ দেবপুত্র বাহিকণিষ্ক স্তূপ দর্শনে আসিবেন। ক্রমে দিবাবসান সময় আগত দেখিয়া আগন্তুকগণ প্রস্থান করিলেন। মলিন কাষায় পরিহিত ভিক্ষুগণ এখন উপত্যকাবাসী জনপদের পুরোহিতের কার্য্য করিয়া থাকেন, মেষচর্ম্মপরিহিত ব্যক্তিদ্বয় নগরবাসিগণের বংশজাত, কিন্তু বর্ম্মাবৃত পুরুষ বিদেশীয়; তিনি শকসাম্রাজ্যের একজন সম্ভ্রান্ত রাজপুরুষ, রাজাদেশে তথাগতের শরীর গর্ভস্তূপের অন্বেষণে আসিয়াছিলেন। পরদিবস প্রাতে বনের মধ্যে মহাকায় প্রাচীন বৃক্ষসমূহ উৎপাটিত হইতে লাগিল, সে পথ তোমরা দেখিয়াছ। বর্ব্বর রমণীগণ এখনও শুষ্ক করিবার জন্য সেই সকল পাষাণে গোময় লেপন করিয়া থাকে। পথ নির্ম্মিত হইলে স্তূপ ও বেষ্টনী পরিষ্কৃত হইল, ক্রমে বনের একাংশে শ্রমজীবিগণের একটি গ্রাম বসিয়া গেল; স্তূপ-সংস্কার আরম্ভ হইল। অশ্বাচ্ছাদিত নবনির্ম্মিত পথে একদিন মধ্যাহ্ণে চক্রের ঘর্ঘরধ্বনি শ্রুত হইল। আমরা শকটের আগমন প্রতীক্ষায় উৎকণ্ঠিত হইয়া রহিলাম; ভাবিলাম, বোধ হয় রাজা আসিতেছেন। কিন্তু দুই প্রহর কাল অতীত হইলে দৃষ্ট হইল বৃহদাকার শকটে স্থাপিত রক্তবৃর্ণ প্রস্তর স্তূপাভিমুখে আসিতেছে, হস্তিদ্বয় প্রত্যেক শকট লইয়া আসিতেছে। দেখিবমাত্র

৭৪