পাতা:পাহাড়ে মেয়ে - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
দারােগার দপ্তর, ১৪৬ সংখ্যা।

বুঝিতে না পারিয়া, পিতামাতাকে লুকাইয়া এক কর্ম্ম করিতে গিয়া, তাহার যথেষ্ট সাজা পাইলেন, এই অপমানে তাঁহারা অতিশয় লজ্জিত হইতেন। তাহার উপর আবার বেশ্যাবাড়ী যাওয়ায় যে তাঁহাদিগের সমস্ত দ্রব্য অপহৃত হইয়াছে, এ কথা আর কাহারও নিকট প্রকাশ করিতে পারিতেন না, মনের যন্ত্রণা মনেই নিবৃত্ত করিতেন। তবে যে সকল ব্যক্তির হিতাহিত জ্ঞান নাই, মান-অপমানের ভয় নাই, ভালমন্দ বিচারের ক্ষমতা নাই, তিনি পাপ কথার কিছুমাত্র লুকাইতেন না; প্রকাশ্যে পুলিসের নিকট নালিস করিতেন যে, তাঁহার সমস্ত দ্রব্য চুরি গিয়াছে; তিনি যে সময় পুলিশ কর্ত্তৃক থানায় আনীত হন, সে সময় তাঁহার কিছুমাত্র হুঁস ছিল না। যখন বেহুঁস অবস্থায় প্রকাশ্য রাস্তায় পড়িয়াছিলেন, তখন কে তাঁহার দ্রব্য চুরি করিল, বা তিনি কোথায় ফেলিয়া দিলেন, ইহার কিছুমাত্র স্থির না হওয়ায়, সে বিষয়ের আর অধিক উচ্চবাচ্য হইত না; সুতরাং আমাদের উপর আর কেহই সবিশেষ সন্দেহ করিতেন না। তবে যদি কেহ আমাদিগকে জিজ্ঞাসা করিতেন, তাহা হইলে অমাদিগের বাড়ীতে তাঁহার আসার বিষয় একবারেই অস্বীকার করিতাম; কখন বা স্বীকার করিয়া বলিতাম, যখন তিনি চলিয়া গিয়াছেন, তখন তিনি সম্পূর্ণরূপ মাতাল ছিলেন না, এবং তাঁহার সমস্ত দ্রব্যই তাঁহার নিকট ছিল।

 “এইরূপে আমি আমার বাড়ীতে আগত লোকদিগকে ঠকাইয়া, তাহাদিগের দ্রব্যাদি চুরি করিয়া, কিছুদিবস অতিবাহিত করিলাম সত্য, কিন্তু পাপের পথ আর কতদিন প্রশস্ত থাকিবে? অতি শীঘ্রই আমার সেই পাপময়ী রাস্তা রুদ্ধ হইল। তখন