পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাধাধরা উপদেশগুলি নেপথ্যে রাখিয়া নানা বিষয়ে শশীর সঙ্গে আলাপ করেন। ক্ৰমে ক্রমে মনে হয়। অনেকগুলি বছর আগে তাদের মধ্যে যে গুরু-শিষ্যের সম্পর্কটি স্থাপিত হইয়াছিল, আজ তাহা বাতিল হইয়া গিয়াছে ! ধর্মের কথা নয়, ইহকাল পরকাল পাপ-পুণ্য সম্বন্ধে প্রশ্নোত্তর নয়, এবার তাদের মুখোমুখি বসিয়া শুধু গল্প করা, অসমবয়সী দুটি বন্ধুর মতো । দুটি দিন। এখানে বাস করিতে না করিতে শশীর কাছে একটা মুখোসা যেন ভোলা ব্ৰহ্মচারীর খসিয়া গেল, ভিতরের আসল মানুষটির সঙ্গে শিষ্যের তিনি পরিচয় ঘটিতে দিলেন । আপনভোলা সদাশিব মানুষ, অনেকটা যাদবের মতো । ঘটনাচক্ৰে তিনি ব্ৰহ্মচারী, সাধা করিয়া নয়-তারপর অভ্যাস হইয়া গিয়াছে। ক্ৰমে ক্ৰমে জীবনের দু-একটি ঘটনা ও সম্ভাবনার কাহিনী শশীকে তিনি শোনান । প্ৰথম যৌশন প্ৰথম সন্ন্যাসী-জীবনের কথা, ঘরে যা মেলে নাই তারই অন্বেষণে দেশে দেশে যাযাবর বৃত্তি । অনিশ্চিতের সন্ধানে বাহির হওয়ার এমনি সব কাহিনী চিরদিন শশীকে ব্যাকুল করে । তারও অনেক দিনের বাহির হওয়ার সাধ । গোপালের অনুরোধে শশীীর মনটি ঘরের দিকে টানিকার চেষ্টা করিতে গিয়া তার ঘর-ছাড়ার প্রবৃত্তিকেই ব্ৰহ্মচাৰী উস্কাইয়া দিয়ে গেলেন । দিন সাতেক গুরুসঙ্গ করিয়া গোপাল যেন একটি গা ঝাড়া দিয়া উঠিল। নিজের সঙ্গে কিছু সে একটি রফা করিয়া ফেলিয়া থাকিবে, কারণ দেখা গোল কর্তব্য সম্পাদন ও শশীর প্রতি ব্যবহার তার সহজ ও স্বাভাবিক হইয়া wnifice বলে, হাসপাতালে রোগীপত্র কেমন হচ্ছে শশী ? শশী বলে, বাড়ছে দু-একটি করে । গোপাল আপসোস করিয়া বলে, বেগার খেটেই তুমি মরলে । মাইনে হিসেবে কিছু কিছু নাও না কেন ? পরিশ্রমের দাম তো আছে তোমার, একটা লোক রাখলে তাকে তো দিতে হত ? শশী বলে, হাসপাতালের টাকা কোথায় যে নেব। বাবা ? সামান্য টাকার প্ৰহাসপাতাল, আমিও যদি নিজের পাওনা-গণ্ডা বুঝে নিতে থাকি, হাসপাতাল চলবে কিসে ? তা না নিক শশী মাহিনী বাবদে কিছু, এখনু সেটা আর আসল কথা নয় গোপালের কাছে, ছেলের সঙ্গে একটু সে আলাপ করিল মাত্ৰ ! এমনি নাৰীস্থলত এক ধরণের ছলনাময় ব্যবহার গোপালের অাছে, শশীকে মাঝে মাঝে R. Ryo