পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৩২
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

তাহা বোঝা যাইবে। ৩০শে অক্টোবর ১৯২১, সালের একটি চিঠিতে তিনি লেখেন—“মহীপালের গান সম্বন্ধে আমি একজন গাড়োয়ানকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম। সে এ গান শুনিয়াছে বটে। কিন্তু নিজে গানটি সে জানে না বলে। ফরিদপুরের কোটালিপাড়ার একজন বৃদ্ধ পুরোহিতকেও আমি এ পালা সম্বন্ধে কিছু জানেন কি না জিজ্ঞাসা করি। তিনি বলেন যে তাঁহার দেশে অনেক পুরাতন পালাগান তিনি শুনিয়া থাকেন কিন্তু তিনি এখানকার গ্রাম্য ভাষা ভাল বুঝিতে পারেন না। তাঁহার বিশ্বাস মহীপালের গান ঢাকা ও ফরিদপুর অঞ্চলেও সম্ভবতঃ এখনও গীত হইয়া থাকে। যাহা হউক এ পালার আমি যথাসাধ্য সন্ধান করিব এবং সন্ধান পাইলে কাহাকেও দিয়া তাহা লিখাইবার ব্যবস্থা করিব। শিক্ষিত ভদ্রলোকেরা এই সকল প্রাচীন গানের উপর নিজের রং ফলাইতে গিয়া ইহাদের মৌলিকত্ব যে নষ্ট করেন সে সম্বন্ধে আপনার সহিত আমি একমত।”

 এই সময়ে রঙ্গপুরে স্বদেশী আন্দোলন শুরু হয় এবং মিঃ ফ্রেজার সম্পূর্ণভাবে সেই ব্যাপার লইয়া ব্যস্ত হইয়া পড়েন। এ গোলযোগ শান্ত হইলে কতকটা অবসর পাইবার পূর্বেই মিঃ ফ্রেজার অন্যত্র বদলী হন। ১৯২৮ সালে আমি আমাদের পালা-সংগ্রাহক মৌলভি জসীমুদ্দিনকে রঙ্গপুরে এ পালাগানটি বিশেষ করিয়া সন্ধান করিবার জন্য পাঠাইয়াছিলাম। তিনিও শেষ পর্যন্ত শূন্য হস্তে প্রত্যাবর্ত্তন করেন। পালাটি যে এখনও আছে এ খবর অনেক লোকের নিকট পাইলেও আসল পালা-গায়কের দেখা তিনি পান নাই। ইহার পর আমি আমার বন্ধু রঙ্গপুরের এক জমিদারের ম্যানেজার শ্রীযুক্ত পূর্ণচন্দ্র সেনের শরণ লই। তিনি ময়নামতীর গানের কিয়দংশ পাঠাইয়া পরে মহীপালের পালা পাঠাইবেন বলিয়া আশ্বাস দেন। কিন্তু সে আশ্বাস তিনি পূর্ণ করিতে পারেন নাই।

 বারবার এই পালা সংগ্রহে ব্যর্থ হইবার পর মনসুরউদ্দীন যখন আমাকে জানান যে পালবংশের দশম শতাব্দীর সুবিখ্যাত মহীপাল সম্বন্ধে তিনি একটি পালা পাইয়াছেন তখন আমার পক্ষে উৎসাহিত হওয়া স্বাভাবিক। আমাদের দেশের এক জাতীয় উৎকৃষ্ট চাউল এখনও