পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ গীতিকা 8שג আর কয়ো কইওরে ভাগীদার দুখিনী মায়েরে। আর না। যাইবে মামুদ্ৰ উজ্জ্বল চাঁদের ভিটার ঘরে ৷” এই “চাদের ভিটার ঘরে”র একটু ইতিহাস আছে। পালালেখক পুনঃ পুনঃ চাঁদের ভিটার উল্লেখ করিয়াছেন এবং বুঝাইয়াছেন যেখানে চাঁদ সদাগরের বাড়ী ছিল সেই ভিটাতেই উজ্জ্বল সদাগর বাস করিত । তঁহার লেখার ভাবে মনে হয় যে, গল্পনায়ক উজ্জ্বল সদাগর চাঁদ সদাগরের বহু পরবর্তী ংশধর ছিল । 源 উজ্জ্বল পাগল হইয়া আয়নার উদ্দেশে ঘুরিতে লাগিল। একদিকে আয়নার ব্যাকুল বিরহব্যথা, অপরদিকে উজ্জ্বলের মাতার করুণ আৰ্ত্তি বিফল হইল। তাহার মাতা শীঘ্ৰ তাহাকে ফিরিয়া পাইলেন না। জ্যৈষ্ঠ মাসে উজ্জ্বল বাড়ী হইতে চলিয়া গিয়াছে, সেই মাস আবার ফিরিয়া আসিল “আম পাকে জাম পাকে ডালে ক্যাগের রায় । কাটিয়া গাছের ফল মায় পুত্রেীরে খাওয়ায় ৷” প্রভৃতি নানারূপ স্মৃতিজড়িত করুণ বাৎসল্য রসের পরিচয় এই পালা গানে অতি মৰ্ম্মস্পর্শী ভাবে ফুটিয়া উঠিয়াছে। কিন্তু মিলনের সুখের আশা ত্যাগ করিয়া জননী ভগবানের নিকট প্রার্থনা করিতেছেন— “পুত্র আমার বেঁচে থাকুক লোহার কাঠি হইয়্যা । পীরের সিন্নি মানে মায় অঞ্চল পাতিয়া ৷” যখন আষাঢ় মাসে বনের পাখী ডালে বাসা বঁধিত, তখন উজ্জ্বলের মাতার মনে দারুণ কষ্ট হইত। তিনিও মনে করিয়াছিলেন যে আষাঢ় মাসে পুত্রের বিবাহ দিয়া নূতন করিয়া গৃহস্থালী রচনা করিবেন। বস্তুতঃ পল্লীকবি যখন বাঙ্গালীর ঘরের সুখ ও দুঃখের কথা বৰ্ণনা করেন, তখন র্তাহার সুরে ভাটিয়াল গানের সমস্ত মধুরত্ব ভরিয়া উঠে। এই নিবিড় করুণ রস আমরা এই পালা গানে যেরূপ প্রচুর পরিমাণে পাইয়াছি, অন্যত্র সেরাপ পাই নাই । ঘুরিতে ঘুরিতে উজ্জ্বল সাধু একদিন সন্ধ্যাকালে কোনও দূর গ্রামে উপস্থিত হইল, তখন পল্লীর ছোট ছোট রন্ধনশালা হইতে ধূমরাশি উঠিয়া