পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - চতুর্থ খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৬১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

') )V ভারতবর্ষ | দেশের প্রসিদ্ধ ভ্রমণকারী ইবন-বাতুত। দেশ-ভ্রমণে বহির্গত হন। তিনি চব্বিশ বৎসর কাল ( ১৩২৫ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৩৪৯ খৃষ্টাব্দ পর্য্যস্ত ) বিদেশ-ভ্রমণে ব্ৰতী ছিলেন। মহম্মদ তোগলকের দুতরূপে ইবন-বাতুত। চীনদেশে গমন করেন। কাম্বে হইতে তিনি জাহাজে আরোহণ করিয়াছিলেন । কালিকট, সিলোন, বঙ্গদেশ প্রভৃতি স্থান-সমূহে অশেষ বিপদ অতিক্রম করিয়া তিনি চীনদেশাভিমুখে অগ্রসর হন। চীনদেশ হইতে প্রত্যাগমনকালে প্রথমে মালবার-উপকূলে আসিয়া তিনি কিছুদিন অপেক্ষা করিয়াছিলেন। অবশেষে মালবার উপকূল হইতে তিনি মস্কটে ও অর্মজে গমন করেন। ভারতের বন্দর-সমূহ সম্বন্ধে মার্কোপোলে যে সকল বিষয় লিখিয়া যান, ইবন-বাতুতার ভ্রমণ-বৃত্তান্তে প্রায়ই সেই সকল বিষয়ের পোষকতা দৃষ্ট হয়। তবে জল-দস্থ্যর উপদ্রব সম্বন্ধে ইবন-বাতুত প্রকারীস্তরে মার্কোপোলোর উক্তির প্রতিবাদ করিয়াছেন বলিয়াই বুঝা যায়। ইবন-বাতুত। বলেন,—“যে সকল বাণিজ্য-পোত বাণিজ্য-শুস্ক প্রদান না করিয়া প্রবঞ্চনা করিবার চেষ্টা পাইত, জলদসু্যগণ সেই সকল পোত লুণ্ঠন করিত।” ফলে, বৈদেশিকগণের নিকট দস্থানামে অভিহিত হইলেও লুণ্ঠনকারিগণ রাজবিধি-লঙ্ঘনকারিগণের দণ্ডদানে রাজবিধিরক্ষারই সহায়তা করিত। ঐতিহাসিক ওয়াসেক চতুর্দশ শতাব্দীতে বিদ্যমান ছিলেন । ‘মাবার বাণিজ্য-বন্দর প্রসঙ্গে তাহার উক্তি পূৰ্ব্বে উল্লেখ করিয়াছি ( এই পরিচ্ছেদের ১৭৯ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য )। ওয়াসেফ বলেন,—‘মাবার (মালবর ? ) বন্দরে আরব ও পারস্য হইতে বহু অশ্ব বিক্রয়ার্থ আসিত। আবু-বাকরের রাজত্বকালে এক এক বৎসর দশ সহস্রাধিক অশ্ব ঐ বন্দরে আমদানী হইয়াছিল।” মার্কোপোলে ( ১৩৪৮ খৃষ্টাব্দে ) এই অশ্ব-ব্যবসায়ের বিষয় উল্লেখ করেন । তিনি বলেন,—“ভারতের রাজস্বের অধিকাংশ, অশ্ব-ক্রয়ের জন্য বিদেশে চলিয়া যাইত। মার্কোপোলোর পর বৈদেশিকগণের গ্রন্থে ভারতবর্ষের বাণিজ্যসম্বন্ধে যে উল্লেখ দৃষ্ট হয়, মা-হুয়ানের বৃত্তান্ত তাহার মধ্যে বিশেষ প্রয়োজনীয়। মা-হুয়ান— মুসলমান-ধৰ্ম্মাবলম্বী চীন । পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে চীন-দেশ হইতে চেংহে যখন ভারতবর্ষ ও অন্যান্য দেশ-পরিভ্রমণে আগমন করেন, মাছয়ান তখন দোভাষীরূপে উপহার সঙ্গে ভারতবর্ষে আসিয়াছিলেন । ১৪০৯ খৃষ্টাব্দে তিনি কালিকট বন্দরের বাণিজ্যসম্পদের বিষয় বর্ণন করেন। ঐ বন্দর তৎকালে বাণিজ্যের কেন্দ্র-স্থান মধ্যে পরিগণিত ছিল এবং বিভিন্ন দেশের বণিকগণ ঐ বন্দরে বাণিজ্য করিতে আসিতেন। চীনদেশ হইতে যখন কোনও বাণিজ্য-পোত ঐ বন্দরে উপনীত হইত, তখন রাজকীয় বাণিজ্যপরিদর্শকগণ জনৈক ‘চিটুটি’ বা মহাজনের সহিত বাণিজ্য-পোতে আগমন করিতেন। তখন পণ্য-দ্রব্যাদির তালিকা প্রস্তুত হইত এবং তৎসমুদায়ের দর-নিৰ্দ্ধারণের জন্য একটী দিন নির্দিষ্ট হইত। বাণিজ্যের বিষয় উল্লেখ ব্যপদেশে, চীনদেশের বাণিজ্যের সুবিধার জন্য ভারতবর্ষ হইতে যে ছুত প্রেরিত হইত, মাছয়ান তদ্বিষয় বিশদভাবে আলোচন। করিয়া গিয়াছেন । খৃষ্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীতে ( ১৪৪২ খৃষ্টাব্দে ) আবদার রাজ্জক কালিকটবন্দরের সমৃদ্ধির বিষয় উল্লেখ করেন। তিনি বলেন,-“কালিকট হইতে সৰ্ব্বদাই বাণিজ্যপোত-সমূহ মক্কা-নগরে গমন করিত ; সেই সকল বাণিজ্য-পোতে প্রধানতঃ মরিচ