পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

फूभिका কঠিন নহে । বস্তুত, মনসার ভাসান-গান এ দেশের বহু সাধনার সামগ্ৰী ছিল। ৪ • • বৎসর পূর্বে চৈতন্যভাগবতকার বৃন্দাবনদাস লিখিয়াছেন, বহুলোক সেই সময়ে ‘দম্ভ করিয়া’ বিষহরীর পূজা দিত। বৃন্দাবনদাসের সমসাময়িক কবি বিজয়গুপ্ত একখানি মনসার ভাসান রচনা করিয়াছিলেন। তাহার ভূমিকায় তিনি লিখিয়াছেন, কাণ হরিদত্তই মনসার গানের অ্যাদি কবি । বিজয়গুপ্ত আরও লিখিয়াছেন, তঁাকার সময়েই উক্ত আদি কবির গান কালক্রমে লুপ্ত হইয়া গিয়াছিল । সুতরাং কাণা হরিদত্ত বিজয়গুপ্তের অন্ততঃ দুই শত বৎসর পূর্বে বিদ্যমান ছিলেন, এরূপ অনুমান করা যায় । কাণ তারিদত্ত তাহা হইলে প্ৰায় ৭ শত বৎসর পূর্বে গান রচনা করিয়াছিলেন, সুতরাং তিনি বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস প্রভৃতি কবিরও পূৰ্ববৰ্ত্তী। সম্প্রতি কাণ হরিদত্তের গানের কতকাংশ মৈমনসিংহ হইতে পাওয়া গিয়াছে । এই সুদীর্ঘকাল যাবৎ “মনসা-মঙ্গল’ বাঙ্গালার গৃহে গৃহে গীত হইয়া আসিয়াছে। ভাসান-গানে লোকবৃন্দ যে কিরূপ উৎসাহিত হয়, তাহা যিনি প্রত্যক্ষ না করিয়াছেন, তঁ স্থার পক্ষে অনুমান করা কঠিন ব্যাপার । বরিশাল, শ্ৰীহট্ট প্রভৃতি অঞ্চলে শ্রাবণ মাসে নরনারী এই গান শুনিয়া তন্ময় হইযা যায়--তাহদের সেই উন্মত্ত আবেগ দর্শনে স্বতঃই মনে একটা আশ্চর্য্যের ভাব উদয় হয় যে, বঙ্গের পল্লীতে পল্লীতে এই যে একটা মহাভাবের আবৰ্ত্ত চলিয়া যায়--তাহার একটা লহরী পৰ্য্যন্ত আসিয়া শিক্ষিতসম্প্রদায়ের কাছে পৌছে না । স্বদেশের এরূপ পুরাতন ও পরিচিত ভাবের সঙ্গে ঘঁহাদের কোনও সংস্রব নাই, তঁহাদিগকে খাটি স্বদেশী বলিব কি প্রকারে এবং তঁহাৱাই বা দেশের প্রতিনিধি বলিয়া সৰ্ব্বত্র পরিচয় দিবেন। কি ভরসায় ?